বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে সহজ করে তুলছে। আমরা চাই বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার। আবার বাসগৃহ, বিদ্যালয়, অফিস, কল- কারখানাসহ সকল স্থাপনায় বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং-এ ব্যবহৃত ফিটিংস ও ফিক্সার, সংযোগকারী তার ও সহায়ক উপকরণের নান্দনিক বিন্যাস সৌন্দর্য্য বর্ধন বা অক্ষুন্ন রাখার জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। একটি স্থাপনায় বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যর ও নিরাপত্তা নির্ভর করে ওয়্যারিং-এ ব্যবহৃত ফিটিংস ও ফিক্সার এর উপর । বৈদ্যুতিক ফিটিংস ও ফিক্সার স্থাপনের কাজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ জ্ঞান, দক্ষতা এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া। এ অধ্যারে ফিটিংস ও ফিক্সার এর পরিচিতি, প্রকারভেদ ও ইন্সটলেশন নিয়ে আলোচনা করা হলো।
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা ইন্ডিকেটর, ফিউজ, সুইচ ও সকেটসহ সুইচবোর্ড ফিক্সআপ করব এবং ওয়্যারিং বোর্ডে ব্যাটেন হোল্ডার ও সিলিং রোজ ফিক্সআপ সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ সম্পর্কে জানব ।
বৈদ্যুতিক বাতির হোল্ডারের শেডসহ ধরে রাখার জন্য সমস্ত সরঞ্জাম যেগুলো ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সুবিধা ভোগ করা যায় সেগুলোকে বৈদ্যুতিক ফিটিংস বলে। এটি বৈদ্যুতিক ইন্সটলেশনের অংশ বিশেষ ।
নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিটিংস এর নামের তালিকা দেয়া হলো- এটি
১। ইন্ডিকেটর ল্যাম্প
২। ল্যাম্প হোন্ডার
৩। মেইন সুইচ
৪। সার্কিট ব্রেকার
৫। সিলিং রোজ
৬। সকেট
৭। সকেট আউটলেট
৮। রেগুলেটর
৯। সুইচ
১০। এম সি বি
১১। প্রাগ
১২। ফিউজ
১৩। জাংশন বক্স
১৪। ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড
১৫। সাব-ডিস্ট্রিবিউশন বোড
১৬। সুইচবোর্ড
ফিক্সার হচ্ছে এমন সব হার্ডওয়্যার সামগ্রী যেগুলো দেয়ালের সাথে বৈদ্যুতিক ফিটিংস আটকানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। আবার কিছু কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ফিক্সারের অন্তর্ভুক্ত। নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিক্সারের নামের তালিকা দেয়া হলো-
১। কাপলার
২। লক নাট
৩। কানেক্টর
৪। রাওয়াল প্লাগ
৫। পেরেক
৬। হুক
৭। তারকাটা
৮। স্যাডল
৯। বুশ
১০। রিডিউসার
১১। কর্ণার
১২। ক্লিপ
১৩। মেশিন স্কু
১৪। বেড
১৫। স্টপিং প্লাগ
১৬। কট স্কু
১৭। আর্থিং ক্ল্যাম্প
এখন কতিপর ফিটিংস নিয়ে আলোচনা করা হলো-
যখন কোনো ইন্ডিকেটর সুইচ বোর্ডে স্থাপন করা হয় তখন তাকে ইন্ডিকেটরসহ সুইচ বোর্ড বলে। কোনো সুইচ বোর্ডে ইন্ডিকেটর জ্বলতে থাকলে বুঝা যায় যে ঐ বোর্ডে বিদ্যুৎ আছে।
ইলেকট্রিক সুইচ বোর্ডে যে উপাদানটি সবসময় জ্বলে, আমরা যেটার সাহায্যে ইলেকট্রিক সুইচবোর্ডের দিকে তাকালে বুঝতে পারি বিদ্যুৎ আছে কি নাই তার নাম হলো ইন্ডিকেটর। এটি বোর্ডে রেজিস্টরসহ প্যারালালে সংযোগ করা থাকে। এর দুটি দিনের মধ্যে একটি ফেজ ও একটি নিউট্রাল লাইনে সংযোগ থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইন্ডিকেটর ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে নির্দেশ করে। একে ফন্ট সার্কিট ইন্ডিকেটরও বলা হয়। এটি ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ও সুইচবোর্ডে ব্যবহার করা হয়।
এটি সাধারণত: ৫-১০ mA, ১.৫V এর হয়ে থাকে। ইন্ডিকেটর বিভিন্ন প্রকৃতির যেমন: নিয়ন ল্যাম্প, লাইট ইমিটিং ডায়োড (LED) এবং লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD) ল্যাম্প। লাইট ইমিটিং ডায়োড এর ক্ষমতা ৭.৫ mw থেকে ১৫ mw পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোনো সার্কিট বা যন্ত্রপাতির অপারেটিং অবস্থা জানার জন্য এবং সতর্কীকরণ ঘন্টা পাওয়ার জন্য সার্কিট বা যন্ত্রপাতিতে ইন্ডিকেটর সংযোগ করা হয়। এটি ত্রুটিযুক্ত ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ ও চিহ্নিত করে। ফলে ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে ভাল অংশ হতে সহজেই আলাদা করা যায়। এতে যন্ত্রপাতির ক্ষয়ক্ষতি কম হয় ও অপচয় রোধ হয়।
সুইচবোর্ডের সাইজ বলতে এর ক্ষেত্রফলকে বোঝায়। সুইচবোর্ডে ব্যবহৃত আউটলেটের সংখ্যার ভিত্তিতে সুইচ বোর্ডের সাইজ নির্ধারণ করা হয়। সুইচবোর্ড সাধারণত শক্ত প্লাস্টিক বা এবোনাইট দিয়ে তৈরি হয়। সুইচ, সকেট, ফ্যান, রেগুলেটর প্রভৃতি স্থাপন করার জন্য সুইচবোর্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্থাপনযোগ্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সাইজের সুইচবোর্ড পাওয়া যায়। সুইচবোর্ডে সুইচ, সকেট, ফিউজ, ফ্যান রেগুলেটর ইত্যাদি বসানোর জন্য খাঁজ কাটা থাকে। খাঁজ কাটা ছাড়াও বিভিন্ন মাপের বোর্ড পাওয়া যায়। নিচের চিত্রে সুইচসহ ১০০ মি. মি. x ১৫০ মি. মি. (৪ ইঞ্চি ২৬ ইঞ্চি) সাইজের একটি সুইচ বোর্ড দেখানো হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের জন্য নিম্নলিখিত পরিমাপের সুইচবোর্ড বাজারে পাওয়া যায়-
৭৫ মি. মি.×৭৫ মি:মি: (৩"x৩"),
১০০ মি. মি.×১৫০ মি. মি. (4"x6"),
১২৫ মি. মি. x ২০০ মি: মি: (৫" x ৮"),
২০০ মি. মি. x ২৫০ মি. মি. (৮"x১০")
সুইচবোর্ড স্থাপনের ধাপসমূহ-
১। নিৰ্দিষ্ট সুইচবোর্ড, সুইচ ও টুলস বাছাই করতে হবে।
২। সুইচবোর্ডে সুইচ স্থাপনের জন্য মাপমত কাটতে হবে।
৩। সুইচের কস্তার বা ঢাকনা খুলতে হবে।
৪। সুইচের অবস্থা চিহ্নিত করে ভারের জন্য বোর্ডে ছিদ্র করতে হবে।
৫। প্রয়োজনীয় দৈর্ঘ্যের ইনসুলেশন খুলে ইনসুলেশন যুক্ত অংশটি পরিষ্কার করতে হবে।
৬। ছিদ্র দিয়ে তার ঢুকানোর জন্য টার্মিনাল পোস্টে সংযোগকারী স্ক্রু গুলো ঢিলা করতে হবে।
৭। টার্মিনাল পোস্টে তার সম্পূর্ণভাবে লাগিয়ে ড্র গুলো শক্তভাবে আটকাতে হবে।
হোন্ডার এমন একটি সরঞ্জাম যা একটি বাতিকে আটকিয়ে বা ধরে রাখে। হোল্ডার এর মধ্যে ইলেক্ট্রিক বাতি ঢুকিয়ে বা স্থাপন করে বাতি জ্বালানো হয়।
বৈদ্যুতিক তারের সাথে বাতি লাগানোর জন্য যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয় তাকে হোল্ডার বলে। বাল্ব আটকানোর জন্য ল্যাম্প হোল্ডার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফিটিংস। আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকারের ল্যাম্প হোল্ডার পাওয়া যায় ।
গঠন ও ব্যবহার এর উপর নির্ভর করে হোল্ডার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ব্যাটেন হোল্ডার, পেনডেন্ট হোল্ডার, ব্রাকেট হোল্ডার, ফ্লোরোসেন্ট ল্যাম্প হোল্ডার, স্যুইভেল হোল্ডার, পুশ-পুল হোল্ডার, কী সুইচ হোল্ডার ইত্যাদি।
ব্যাটেন হোল্ডার: ব্যাটেন হোল্ডার সাধারণত ব্যাটেন ওয়্যারিংয়ে বা কাঠের বোর্ডে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ছাদে বা দেয়ালে লাগানোর জন্য এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
পেনডেন্ট হোল্ডার: ঝুলন্ত ল্যাম্পকে জ্বালানোর জন্য পেনডেন্ট হোল্ডার ব্যবহার করা হয়। ছাদে আটকানো সিলিং রোজ হতে ফ্লেক্সিবল তারের মাধ্যমে সংযোগ দেয়ার জন্য পেনডেন্ট হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
ব্রাকেট হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডারের এক প্রান্তে প্যাচ কাটা একটি ক্যাপ থাকে। ক্যাপের সাহায্যে পেঁচিয়ে ব্রাকেটের এক প্রান্তে হোল্ডার লাগানো হয়। ব্র্যাকেটের অন্য প্রাপ্ত দেয়ালে লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। ব্র্যাকেটসহ এটি দেয়ালে ব্যবহার করা হয়।
কী সুইচ হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডার সাধারণত টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়। ল্যাম্প জ্বালানো এবং নিভানোর জন্য এ হোল্ডারের গায়ে সুইচ এর ব্যবস্থা থাকে বিধায় এরূপ নামকরণ হয়েছে। সেজন্য খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায় এমন জায়গায় এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
পুশ-পুল হোল্ডার: এ হোল্ডার কী সুইচ হোল্ডারের ন্যায় টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়। হোল্ডারের গায়ে একটি সুইচিং ব্যবস্থা আছে, যার সাহায্যে বাতি জ্বালানো ও নিভানো হয়। খুব সহজে নাগালে পাওয়া যায় এমন জায়গায় ল্যাম্পকে জ্বালানো এবং নিভানোর জন্য এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয় ।
স্যুইভেল হোল্ডার: বিভিন্ন দিকে আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দোকানে, প্রদর্শনীতে এবং জনসমাগম স্থানে ব্যবহৃত বাতিতে এ হোল্ডার ব্যবহৃত হয়।
ক্লোরোসেন্ট ল্যাম্প হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডার ফ্লোরোসেন্ট টিউব লাইট জ্বালানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটা টিউব লাইট সংযোগে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং দামেও স
বেয়নেট ক্যাপ হোল্ডার: সাধারণত: ২০০ ওয়াট পর্যন্ত বাতির জন্য বেয়নেট ক্যাপ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাড়ি ও অফিসে বাতি জ্বালানোর জন্য এ ধরনের হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
ফু ক্যাপ হোল্ডার: তুলনামূলকভাবে অধিক ক্ষমতা (২০০ থেকে ১০০০ ওয়াট) সম্পন্ন বাতির জন্য ক্যাপ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন গঠন ও আকারের সিলিং রোজ পাওয়া যায়। সিলিং রোজ ব্যবহারে ওয়্যারিং এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
সাধারণত বুলক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেমন: বাতি, পাখা, টিউব লাইট ইত্যাদিতে সরবরাহ প্রদানের জন্য খরের ছাদে বা সিলিং এ যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয়, তাকে সিলিং রোজ বলা হয়। ২৫০ ভোল্টের বেশি বৈদ্যুতিক সার্কিটে সিলিং রোজ ব্যবহার করা হয় না। সিলিং রোজের ঢাকনার ভিতরে তারের গিট দেয়া হয় যেন সংযোগ স্থায়ী হয় বা খুলে না যায়। নিচের চিত্রে সিপিং রোজ দেখানো হলো।
ফ্লেক্সিবল তার দিয়ে সিলিংরোজ এর মাধ্যমে ঝুলন্ত বাতি, সিলিং ফ্যান, ফ্লোরেসসেন্ট বাতি ইত্যাদি সংযোগ করতে হয়।
১.৪ সফেট (Socket) : সকেটের মাধ্যমে সহজেই বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়। সাধারণত কম অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে টু-পিন সকেট এবং বেশি অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে থ্রি-পিন সকেট সংযোগ করা হয়। আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির সকেট পাওয়া যায়।
সকেট হচ্ছে বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং লাইনে ব্যবহৃত এমন ধরনের সরঞ্জাম যার মাধ্যমে সর্বদা বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হয়। যেমন— টেবিল ল্যাম্প, টেবিল ফ্যান, টিভি, রেডিও, ক্যাসেট রেকর্ড প্লেয়ার, ডিভিডি ইত্যাদির ক্ষেত্রে টু-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক ইসি, ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রিল মেশিন ও ইলেকট্রিক হ্যাঙ ড্রাইভার ইত্যাদির ক্ষেত্রে আর্থ টার্মিনালসহ টু-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া যে সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতব বঙি থাকে এবং এটি বিদ্যুতায়িত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি সেই সকল ক্ষেত্রে থ্রি-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। যেমন- রেফ্রিজারেটর, রুম হিটার, টেবিল হিটার, হট-প্লেট, বৈদ্যুতিক ওভেন ইত্যাদি।
সকেট সাধারণত তিন প্রকার। যথা-
১) টু-পিন সকেট, ৫A (সুইচসহ বা সুইচ বিহীন)
২) থ্রি-পিন সকেট, ১৫A (সুইচসহ বা সুইচ বিধী)
৩) পাঁচ-পিন সকেট, ১৫A
এ ছাড়া আজকাল উপরে উল্লিখিত সবগুলো সকেটই সুইচের সাথে একত্রে পাওয়া যায় যা কথাইড সুইচ-সকেট নামে পরিচিত। একাধিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এক স্থান হতে চালানোর জন্য বর্তমানে এক্সটেনশন কর্ডযুক্ত মাল্টি- সকেট পাওয়া যায়। সামরিকভাবে বিদ্যুৎ এর লাইন বর্ধিত করার জন্য এ ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়।
টু-পিন সকেট হলো এমন একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যার মাধ্যমে কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া যায়। এটি সুইচবোর্ড বা এক্সটেনশন কর্ডে স্থাপন করা হয়। সাধারণত টু-পিন সকেট ৫ থেকে ১০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত কারেন্ট বহন করতে পারে। আমাদের দেশের জন্য সকেটে গোলাকার পিন ব্যবস্থাসহ সার্টার যুক্ত থাকে। নিরাপত্তা মূলক সার্টার থাকাতে কোনো কিছু প্রবেশ করতে পারে না। টু-পিন সকেট এর সাইজ বিভিন্ন ধরনের হয়। টু-পিনে সকেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অবশ্যই সুইচ সংযোগ করতে হয় এবং রক্ষণযন্ত্র হিসেবে কিউজ অথবা সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়।
সফেটের ভিতর কন্টাক্ট লুজ হলে স্পার্ক সৃষ্টি হবে। ফলে সকেট গরম হয়ে এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট, এমন কি আগুন লেগে যেতে পারে। দুর্ঘটনা এড়াতে ভালো মানের সকেট ব্যবহার করা উচিত। টু-পিন প্রাণ এর মাধ্যমে লোড সংযোগ দেয়ার পর সকেট গরম হলে কিংবা স্পার্ক বা হিসহিস আওয়াজ করলে সকেট পরিবর্তন করতে হবে।
বর্তমানে অনেক বৈদ্যুতিক লোডে আর্থসহ টু-পিন এর প্লাগ দেয়া থাকে, যার কারণে আর্থসহ টু-পিন সকেট যুক্ত করতে হয়, এতে বৈদ্যুতিক শক এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সাধারণত কম অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে যেমন ৫ অ্যাম্পিয়ার এর সকেট চার্জার বাতি চার্জ করতে, টেবিল ল্যাম্পে, রেডিও, ইলেকট্রনিক ঘড়ি, টেবিল ফ্যান, মোবাইল ফোন ইত্যাদি চালাতে এবং ১৫ অ্যাম্পিয়ার সকেট টেলিভিশন, হিটার, ইস্ত্রি, ফ্রিজ, ওভেন ইত্যদি চালাতে পাওয়ার সার্কিটে থ্রি-পিন সকেট ব্যবহৃত হয়। মাল্টি সকেট বা এক্সটেনশন কর্ড বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে লোড সংযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। খাতায় লিখে শ্রেণি শিক্ষককে দেখাও।
বর্তমানে বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির সুইচ পাওয়া যায়। সুইচ ব্যবহারে লোডে সহজে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সুইচ হচ্ছে অতি জরুরি একটি বৈদ্যুতিক ফিটিংস। এটি সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। বৈদ্যুতিক সার্কিট বা বর্তনীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু (ON) ও বন্ধ (OFF) করতে যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয় তাকে সুইচ বলে। সুইচ ছাড়া বর্তনীতে কারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সুইচ বোর্ড সাধারণত মেঝ হতে ১.৫ মিটার উপরে স্থাপন করা হয়।
সুইচ বৈদ্যুতিক সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। সাধারণত: সুইচে সব সময় ফেজে সংযোগ করতে হয় । এক্ষেত্রে যদি সুইচ ফেজ তারের সাথে সংযুক্ত থাকে তবে সুইচ অফ করলে সুইচের পরে আর কোন ভোল্টেজ থাকে না। ফলে মেরামত কাজ নিরাপদে করা সম্ভব হয়। যদি ভুল করে সুইচ ফেজ তারের পরিবর্তে নিউট্রাল তারে সংযোগ করা হয় তবে সেক্ষেত্রে সুইচ অফ করলে বাতি নিভে যাবে, সুইচ অন করলে বাতি জলবে। কিন্তু নিউট্রাল তারে সুইচ সংযোগ করা হলে সুইচ অফ করলে বাতি নিভে যাবে কিন্তু বাতির হোল্ডারের অংশে ভোল্টেজ থাকবে । তবে সেক্ষেত্রে একজন ইলেকট্রিশিয়ান সুইচ বন্ধ করে সার্কিটে বিদ্যুৎ সাপ্লাই নেই মনে করে মেরামতের কাজ করতে গেলে সে বৈদ্যুতিক শক পাবে, যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যা জীবনের জন্য নিরাপদ নয়।
আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির প্লাগ পাওয়া যায়। প্লাগ ব্যবহারের মাধ্যমে সকেট থেকে লোডে সহজেই সংযোগ দেয়া যায়।
সাধারণত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার জন্য এর সাথে সংযুক্ত তার বা কর্ডের টার্মিনালে যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয়, তাকে প্লাগ বলে। সকেটের মাধ্যমে লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্লাগ ব্যবহার করা হয় । নির্দিষ্ট ধরনের সকেটের সাথে গোল পিন, চ্যাপ্টা পিন এর প্লাগ ব্যবহার করা হয়।
প্লাগ দুই প্রকার। যেমন : টু-পিন প্লাগ (৫ অ্যাম্পিয়ার), থ্রি-পিন প্লাগ (১৫ অ্যাম্পিয়ার)
টেবিল ল্যাম্প, টেবিল ফ্যান, টিভি, রেডিও, ক্যাসেট, রেকর্ড প্লেয়ার, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রিল মেশিন ও ইলেকট্রিক হ্যান্ড গ্রাইন্ডার ইত্যাদিতে টু-পিন প্রাণ সংযুক্ত থাকে। আর ছোট ছোট পিলার ছিল, রেফ্রিজারেটর, রুম হিটার, টেবিল হিটার, হট-প্লেট, বৈদ্যুতিক ওভেন, ইলেকট্রিক সুইং মেশিন, সিংগেল ফেজ প্রাইভিং মেশিন ইত্যাদিতে থ্রি-পিন প্লাগ লাগানো থাকে।
বিল্ডিং এ বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঠিকভাবে লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নিরাপত্তা, স্থায়ীত্বতা, সৌম্পর্য, প্রয়োজনীয়তা, খরচ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ওয়্যারিং টাইপ বা ধরন নির্ধারণ করা হয়। এখানে বিল্ডিং এর বিদ্যুৎ বিতরণের ক্ষেত্রে ওয়্যারিং এর দীর্ঘস্থায়িত্ব, কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আবার ৰাসগৃহ, বিদ্যালয়, অফিস-আদালতসহ সকল স্থাপনায় বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যয় ও নিরাপত্তা নির্ভর করে ওয়্যারিং-এ ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের উপর। এ অধ্যায়ে ইলেকট্রিক্যাল হাউজ ওয়ারিং, উহার প্রকারভেদ, ওয়ারিং কাজে ব্যবহৃত মালামাল ও যন্ত্রপাতি এবং ওয়্যারিং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
এ অধ্যায় শেষে আমরা-
• কাজের জন্য প্রতিগ্রহণ করতে পারব:
• সুইচ বক্স ইনষ্টল করতে পারব
• জাংশন বক্স ইনষ্টল করতে পারব:
• দ্রুত কাটতে পারব:
• ছাদে কনডুইট স্থাপন করতে পারব,
• কনসিন্ড কনডুইট ওয়্যারিং পারফর্ম করতে পারব;
• সারফেস কনভুইট ওয়্যারিং পারফর্ম করতে পারব;
• টুলস ও ইকুইপমেন্ট সংরক্ষণ করতে পারব।
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা সাতটি জব সম্পন্ন করব; জবগুলো যথাক্রমে সুইচ বক্স, জাংশন বক্স, দেয়ালে গ্রুভ কাটা, কনসিল্ড কনডুইট ওয়্যারিং, সারফেস কনডুইট ওয়্যারিং এবং চ্যানেল ওয়্যারিং ইনস্টলেশন করা। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানা প্রয়োজন ।
বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং: বৈদ্যুতিক বিধি অনুযায়ী বৈদ্যুতিক লোডসমূহেকে সাপ্লাইয়ের সাথে সঠিক পদ্ধতিতে সংযোগ করাকেই বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং বা বৈদ্যুতিকরণ (Electrification) বলে। লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার জন্যই ওয়্যারিং করা হয়।
হাউজ ওয়্যারিং: যে সকল ওয়্যারিং কোনো বাসা-বাড়িতে, ঘরে, অফিসে, অভ্যন্তরীন স্থানে করা হয় সেগুলো মূলত হাউজ ওয়্যারিং। বিদ্যুৎ সঠিকভাবে লোডে সরবরাহের জন্য নিরাপত্তা, স্থায়ীত্বতা, সৌন্দর্য, প্রয়োজনীয়তা, খরচ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ওয়্যারিং এর টাইপ বা ধরন নির্ধারণ করা হয়। তন্মধ্যে হাউজ ওয়্যারিং অন্যতম। এ ওয়্যারিং সাধারণত কোনো দেয়ালের সারফেস দিয়ে এবং ভিতর দিয়ে করা হয়ে থাকে। আজকাল হাউজ ওয়্যারিং খুবই জনপ্ৰিয় । ওয়্যারিং এর শ্রেণিবিভাগ ছক আকারে নিচে দেওয়া হলো-
প্রায় সকল ওয়ার্কশপ, কলকারখানায় কন্ডুইট পাইপ এর মাধ্যমে দেয়াল, ছাদ ও মেঝের উপর দিয়ে বা ভিতর দিয়ে এ ধরনের বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং করা হয়। কন্ডুইট ওয়্যারিং এর খরচ নির্ভর করে এর ধরন ও ব্যবহৃত মালামালের গুণাগুণের উপর। এখানে বিল্ডিং এর ওয়্যারিং, উহার প্রকারভেদ, কুন্ডুইট ওয়্যারিং এর প্রকারভেদ, সারফেস ও কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং করতে ব্যবহৃত মালামাল ও যন্ত্রপাতি এবং ওয়্যারিং পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলো।
যখন কোন জায়গায় দেয়ালের উপর দিয়ে বা দেয়ালের ভিতর দিয়ে কন্ডুইট স্থাপন করে যে ওয়্যারিং করা হয়, তখন তাকে কন্ডুইট ওয়্যারিং বলে। পরিবাহী তারকে বাহিরের আঘাত থেকে রক্ষার জন্য কন্ডুইট পাইপের মধ্য দিয়ে ইনসুলেটেড ক্যাবলের মাধ্যমে ওয়্যারিং করাকে কন্ডুইট ওয়্যারিং বলে। এ কাজে ব্যবহৃত কন্ডুইট ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল আঘাত হতে ওয়্যারিংকে রক্ষা করে। যে সব জায়গায় খোলা পিভিসি তারে আঘাতের সম্ভাবনা থাকে, স্যাঁতস্যাঁতে, দাহ্য পদার্থ থাকে সে সব স্থানে এ ওয়্যারিং ব্যবহৃত হয়। কণ্ডুইট হিসেবে জি আই বা পিভিসি পাইপ ব্যবহৃত হয় ।
সাধারণত ব্যবহৃত কণ্ডুইটের ধরন এবং কন্ডুইট ব্যবহারের স্থান অনুসারে এ ধরনের ওয়্যারিং এর শ্রেণিবিভাগ করা হয়। নিচে কন্ডুইট ওয়্যারিং এর শ্রেণিবিভাগ দেওয়া হলো।
এ ধরনের ওয়্যারিং তিন ভাগে ভাগ করা যায় ।
১। সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং
২। কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং এবং
৩। ফ্লেক্সিবল কন্ডুইট ওয়্যারিং।
সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং: যে কন্ডুইট ওয়্যারিং যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষার জন্য দেয়ালের বহিঃ পৃষ্ঠে করা হয় তাকে সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং বলে। এক্ষেত্রে দেয়ালের বহিঃ পৃষ্ঠে বা ছাদের বহিঃ পৃষ্ঠে পাইপ হুক বা স্যাডল এর সাহয্যে কন্ডুইট পাইপ বসিয়ে, এদের ভিতর দিয়ে বৈদ্যুতিক ক্যাবল বা ইনসুলেটেড তার স্থাপন করে ওয়্যারিং করা হয়।
চিত্রে সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং দেখানো হলো।
কনসিষ্ট্য কন্ডুইট ওয়্যারিংঃ যে কন্ডুইট ওয়্যারিং যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষার জন্য দেয়াল, মেঝে কিংবা ছাদের ভিতরে সম্পূর্ণ লুকায়িত অবস্থায় কড়ুইট স্থাপন করে এর ভিতরে করা হয় তাকে কনসিন্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং বলে। এ ওয়্যারিং এ সুইচ বোর্ড, জাংশন বক্স এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ছাড়া কোন ওয়্যারিং বা লাইন দেখা যায় না ।
ফ্লেক্সিল কন্ডুইট ওয়্যারিং: সাধারণত শিল্প-কারখানায় মেশিন পরের সাথে সংযোগ দেওয়ার জন্য ট্ৰাংকিং বা সংশ্লিষ্ট মেশিনের মোটরের স্টার্টার কিংবা কন্ট্রোল বোর্ড থেকে নিরাপদভাবে ভারকে মোটরের টার্মিনাল বক্সে আনার জন্য ফ্লেক্সিবল কড়ুইট ওয়্যারিং করা হয়। এখানে তারকে ফ্লেক্সিবল কড়ুইটের ভিতর দিয়ে মোটরে সংযোগ করা হয়। চিত্রে ফ্লেক্সিবল কড়ুইট ওয়্যারিং দেখানো হলো।
যখন কোন ওয়্যারিং এ বাহিরের আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে তখন ওয়্যারিং রক্ষার জন্য কড়ুইট স্থাপন করে ওয়্যারিং করা হয়। ফলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। পরিবাহী তারকে বাহিরের আঘাত থেকে রক্ষার জন্য কচুইট পাইপের মধ্য দিয়ে ইনসুলেটেড ক্যাবলের মাধ্যমে ওয়্যারিং করার প্রয়োজন হয়। এ কাজে ব্যবহৃত কণ্ডুইট ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল আঘাত হতে ওয়্যারিংকে রক্ষা করে। যে সব জায়গায় খোলা পিভিসি ভারে আঘাতের সম্ভাবনা থাকে, স্যাঁতস্যাঁতে, দাহ্য পদার্থ থাকে সে সব স্থানে এ ওয়্যারিং করা হলে ক্ষতি কম হয়। এ জাতীয় ওয়্যারিং টেকসই হয়। তাই কড়ুইট ওয়্যারিং এর যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে।
কণ্ডুইট ওয়্যারিং কাজে যে সকল ফিটিংস ব্যবহৃত হয় এগুলোর নাম নিম্নে দেওয়া হলো-
১। কন্ডুইট বক্স: আকৃতি অনুযায়ী কভুইট বক্সের নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন- এভ বক্স, প্রো-বক্স, থ্রি-ওরে বক্স, ফোর-ওরে বক্স, আয়তাকার বক্স, গোলাকার বক্স ইত্যাদি।
২। বেন্ড: বেন্ড প্রধানত দুই প্রকার যথা- ক) সলিড টাইপ বেন্ড (খ) ইন্সপেকশন টাইপ বেন্ড ।
৩। বিভিন্ন ধরনের জাংশন বক্স
৪। কন্ডুইটি
৫। লকারিং এবং লক নাট
৬। স্টপিং প্লাগ
৭। টি-কেন্ড
৮। ইন্সপেকশন টি
৯। ইন্সপেকশন বেড
১০। এলৰো
১১। নিপল
১২। ৱিডিউলার,
১৩। বুশ, ১৪। কাপলিং, ১৫। বেস্ত
১৬। স্যাডল ১৭। ক্লিপ ১৮। হক ১৯। পেরেক
২০। সকেট ইত্যাদি।
নিচে কতগুলো ফিটিংস এর চিত্র দেখা হলো-
ইন্সপেকশন বেন্ড : এগুলো সাধারণত দুইপ্রান্তে অভ্যন্তরীণ প্যাচযুক্ত ঢাকনা লাগানো বেড। এটি দ্র-ইন পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এলবো এবং টি (সলিড ও ইন্সপেকশন টাইপ) ইন্সপেকশন টাইপের এলবো এবং টি ড্র-ইন পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
নিচে কতগুলো ফিজার এর চিত্র দেখা হলো-
ক্যাপলিং: এটি দুইটি কড়ুইটকে জোড়া লাগানোর জন্য অভ্যন্তরীণ প্যাচযুক্ত ইস্পাতের পাইপের টুকরা। নিপল: অভ্যন্তরীণ প্যাচযুক্ত ফিটিংস হতে বহির্ভাগে প্যাচযুক্ত ফিটিংস পরিবর্তন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
রিডিউসার: এর বহির্ভাগে বড় সাইজ এবং অভ্যন্তরে ছোট সাইজের কন্ডুইটের জন্য প্যাঁচ কাটা আছে। বুশ (অভ্যন্তরীণ ও বহির্ভাগে প্যাচযুক্ত): টার্মিনাল বক্সে কন্ডুইট লাগানোর কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।
স্টপিং প্লাগ: বাইরের আবর্জনা যেন ঢুকতে না পারে এবং কন্ডুইটের খোলা প্রান্ত বন্ধ করার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে।
ক্লিপ: দেয়াল বা পিভিসি কাঠামোর বহিঃ পৃষ্ঠে কন্ডুইট লাগানোর জন্য এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। স্যাডল: দেয়াল বা কাঠ বা পিভিসি কাঠামোর বহিঃ পৃষ্ঠে কন্ডুইট লাগানোর জন্য এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। স্যাডেলের সাইজ নির্ভর করে কন্ডুইটের ব্যাসের উপর। দেয়ালের বহিঃ পৃষ্ঠে কন্ডুইট পাইপকে আটকানোর জন্য স্যাডেলের প্রয়োজন হয়।
ক) স্ট্র্যাপ স্যাডল: যেখানে কড়ুইট স্থাপনযোগ্য স্থানের বহিঃ পৃষ্ঠে হতে দূরে রাখার প্রয়োজন হয় না, সেখানে এগুলো ব্যবহার করা হয় এবং কন্ডুইটের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজের পাওয়া যায়। স্ট্যাপ স্যাডল দুটি ক্রুর সাহায্যে কন্ডুইট লাগানো হয় ।
খ) স্পেসবার স্যাডল: এ ধরনের স্যাডল একটি পৃথক পাতের উপর বসানো হয়। এ পাতগুলো ৩৭ মি. মি. ব্যস সম্পন্ন কন্ডুইটের জন্য ৩ মি. মি. এবং তদুর্ধ ব্যস সম্পন্ন কন্ডুইটের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজ পাওয়া যায়। স্পেসবার স্যাডল কভুইটকে দেয়াল হতে আলাদাভাবে লাগানোর জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে।
গ) ডিস্ট্যান্স স্যাডল: ডিস্ট্যান্স স্যাডলে দুইটি আলাদা অংশ আছে। কন্ডুইটকে দেয়াল হতে দূরে রাখার জন্য এটি ব্যবহার হয়ে থাকে।
ঘ) মাল্টিপল স্যাডল: সমান্তরাল ভাবে দুই বা ততোধিক কন্ডুইট বসাবার জন্য এ ধরনের স্যাডল ব্যবহার করা হয়। কন্ডুইটের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজের স্যাডল পাওয়া যায়।
যে ধাপসমূহ মেনে কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং এ সুইচ বক্স ও জাংশন বক্স স্থাপন করা হয় তা হলো-
১। নির্দিষ্ট সুইচ বক্স, জাংশন বক্স ও টুলস বাছাই করতে হবে।
২। সুইচ বক্স, জাংশন বক্স ও কন্ডুইটের মাপ অনুসারে দেয়ালে খাঁজ কাটতে হবে ।
৩। দেয়ালের খাঁজে সুইচ বক্স, জাংশন বক্স ও কন্ডুইট বসাতে হবে।
৪। কন্ডুইটের উপর প্রয়োজনীয় প্লাষ্টারিং করতে হবে।
৫। সুইচ বক্স ও জাংশন বক্সের কভার বা ঢাকনা খুলতে হবে।
৬। সুইচ বক্সের অবস্থা চিহ্নিতপূর্বক তারের জন্য বোর্ডে ছিদ্র করতে হবে।
৭। প্রয়োজনীয় দৈর্ঘ্যের ইনসুলেশন খুলে ইনসুলেশন মুক্ত অংশটি পরিষ্কার করতে হবে।
৮। ছিদ্র দিয়ে তার ঢুকিয়ে টার্মিনালে সংযোগকারী ভ্রু গুলো ঢিলা করতে হবে।
৯। টার্মিনালে তার সম্পূর্ণভাবে ঢুকাতে হবে।
১০। সংযোগকারী ভুগুলো দৃঢ়ভাবে আটকাতে হবে এবং সুইচের অপর অংশে লাগাতে হবে এবং
পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবে।
আকৃতি অনুযায়ী কন্ডুইট বক্সের নাম বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন-এন্ড বক্স, টু-ওয়ে বক্স, থ্রি-ওয়ে বক্স, ফোর- ওয়ে বক্স আয়তাকার বক্স, গোলাকার বক্স ইত্যাদি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের জন্য নিম্নলিখিত পরিমাপের সুইচ বক্স ও জাংশন বক্স বাজারে পাওয়া যায়-
৭৫ মি. মি.×৭৫ মি: মি: (৩"x ৩"),
১০০ মি. মি. X১০০ মি. মি. (8" x 8),
১০০ মি. মি. x ১৫০ মি. মি. (৪ x ৬"),
১২৫ মি. মি. x ২০০ মি: মি: (৫" x ৮"),
১৫০ মি. মি. x ২০০ মি. মি. (৬ x ৮),
২০০ মি. মি. x ২৫০ মি. মি. (৮"x১০")
২০০ মি. মি. x ৩০০ মি. মি. (৮”x১২”)
২.২.২ সুইচ বক্স ও জাংশন বক্স ইনস্টলে সতর্কতা
কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং করার সময় মালামাল বা সরঞ্জামাদি নির্বাচন, কন্ডুইট স্থাপন, ফিসওয়্যার ঢুকানো, তার টানাসহ বিভিন্ন কাজে যে বিষয় গুলোকে সতর্কতা মানতে হয় সেগুলো হলো-
১। হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস পড়ে কাজ করতে হবে।
২। কন্ডুইট বসানোর সময় পরিবাহী তার টানার জন্য ফিস ওয়্যার ঢুকাতে হবে।
৩। দেয়াল কাটার সময় সাবধানে হ্যামারের সাহায্যে চিজেলের মাথায় আঘাত করতে হবে, যেন হাতে না লাগে।
৪। সাবধানে কন্ডুইট বাকাতে হবে, বাকানোর সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
৫। সকেট, টি, বেস্ত ইত্যাদি ঠিকভাবে মাপ অনুসারে লাগাতে হবে।
৬। কড়ুইটের ধারালো প্রান্তগুলো রিমার ফাইল দ্বারা মসৃন করতে হবে যাতে তারের ইনসুলেশন নষ্ট না হয় ।
৭। জি আই কড়ুইটের মধ্যে দিয়ে সাবধানে তার বা ক্যাবল টানতে হবে।
৮। কড়ুইটের মধ্যে যেন পানি প্রবেশ না করে এবং পানি না আটকে থাকে, তার জন্য সামান্য চালু করে কভুইট বসাতে হবে।
৯। আর্থিং ভালো হতে হবে এবং ধাতব সরঞ্জাম যেন বডি না হয় তা দেখতে হবে।
১০। মরিচা হতে মুক্ত রাখার জন্য বাইরের প্যাচগুলোতে রং করতে হবে।
প্রায় সকল দালানে কনসিন্ড কড়ুইট ওয়্যারিং ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পিভিসি অথবা জিআই কডুইট ছাদে বসিয়ে ফিস ওয়্যার ঢুকানো থাকে। পরে বিল্ডিং এর কাজ শেষ হলে নিয়ম মোতাবেক বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং করা হয়। এ ধরনের ওয়্যারিং খরচ বেশি কিন্তু সুবিধা অনেক। ইলেকট্রিক্যাল ক্যাবল কোন ধরনের আঘাতের হাত হতে রক্ষা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য দেয়াল বা ছাদের ভিতর দিয়ে ইলেকট্রিক্যাল ওয়্যারিং করা হয়। এ ধরনের ওয়্যারিং কে কনসিন্ড করুইট ওয়্যারিং বলে। এ ওয়্যারিং দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই এবং ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। সাধারণত ছাদে পিভিসি প্লেইন পাইপ ব্যবহার করা হয়। ড্রইং অনুসারে হাসে প্রথমে রুমগুলির মাপ নিয়ে সুভা দ্বারা লে-আউট করতে হবে। রাইজার এর জন্য প্রতি ছাদের কমপক্ষে দুইটি পাইপ রাখতে হবে। ছাদ ঢালাই এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন পাইপের সংযোগ খুলে না যায় বা পাইপ চ্যাপটা না হয়।
কণ্ডুইটের ভিতর দিয়ে ফিস ওয়্যার বা জিআই তার ঢুকানোর জন্য প্রথমে ফিস টেপের বাহিরের প্রাপ্ত অল্প পরিমাণ ঢিলা করে নিয়ে কোন জাংশন বক্সে আগত কন্ডুইটের প্রাপ্ত দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করাতে হবে। অতঃপর সাবধানে ধীরে ধীরে ঠেলে ফিস ওয়্যার প্রবেশ করাতে হবে। এভাবে কড়ুইটের অপর প্রান্তে না আসা পর্যন্ত ফিস ওয়্যার একটু করে ঢিল দিয়ে প্রবেশ করাতে হবে। ফিস ওয়্যারটি কড়ুইটের অপর প্রান্ত দিয়ে বাহির হলে এর সাথে ড্র-তার হিসেবে একটি জি আই তার মজবুত ভাবে আটকাতে হবে। এবার প্রথম প্রান্ত থেকে ফিস ওয়্যারটি টেনে ড্র-ওয়্যারটি সম্পূর্ণ কভুইটের মধ্যে প্রবেশ করাতে হবে। এভাবে কড়ুইটের ভিতর দিয়ে ফিস ওয়্যার বা জিআই তার ঢুকানো হয়।
তার বা ক্যাবলের প্রাপ্ত ছিল ওয়ার বা জিনাই তারের সাথে আটকানোর জামালের প্রায় ফিল ওয়্যার বা লিজাই কারো সাথে আটকানোর জন্য।
এবার তার বা ক্যাবল কার সাথে চির ন্যা আটকাতে হবে। সমতাবস্থার ভারগুলোকে ৰূপ গন যতদূর সম্ভব সরু করে চেপে ধরে টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হবে বেশ ভারের
কোন খোলা ধারালো অংশ দিয়ে না থাকে।
বারি পদক্ষ ড্র-ওয়্যার ভারতলোকে লুপ সহ দুর ন করে চেপে ধরে উত্তম ভাবে টেন দিয়ে প্যাচানোর পর প্রথম প্রান্ত থেকে খুব সবধানে আছে আছে --গ্যারটি টানতে হবে। বেদিক দিয়ে তার সমূহ প্রবেশ করবে সেই প্রাককারী মাড়ে পায়ে একটু করে ঠেলা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। সে সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তার না ফেইলড়াইয়া প্রবেশ করে। এ ভাবে তার যা ক্যাবল কুইটের ভিতর দিয়ে টেনে দিতে হবে। ভারের ফু ছাড়ারে কনুইটের মধ্যে ক্যাবল ঢুকানো ক্ষেত্রে ক্যাবলে তীক্ষ্ণ থাকায় এটির ইনসুলেশন নষ্ট হতে পারে এবং ক্যাবল পরিমাণে বেশি লাগবে। সেজন্য মেশিন বা হস্ত দিয়ে কারণ সোজা করে দিতে হবে আর অন্য দিক থেকে ফিস ভাড়ার টেনে কাজ করতে হবে।
কন্ডুইট ওয়্যারিং করার ক্ষেত্রে কন্ডুইট স্থাপন করা, ফিসওয়্যার ঢুকানো, তার টানাসহ বিভিন্ন কাজে যে বিষয়গুলোতে সতর্কতা মানতে হয় সেগুলো হলো-
১। প্রয়োজনীয় পিপিই নির্বাচন করে সংগ্রহ করে পরিধান করতে হবে।
২। ছাদে কন্ডুইট বসানোর পূর্বে প্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহ করতে হবে।
৩। সকেট, টি, বেন্ড, বক্স ইত্যাদি লাগানোর সময় প্রয়োজনীয় ইনসুলেশন টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে নিতে হবে।
৪। রডের নিচে নির্দিষ্ট মানের ব্লক ব্যবহার করতে হবে যাতে কন্ডুইটের কোনো ক্ষতি না হয় ।
৫। ছাদে পাইপ স্থাপনের সময় জি.আই. তার বা ক্যাবল টাই দিয়ে রডের সাথে বেঁধে দিতে হবে এবং সার্কুলার বক্স স্থাপন করতে হবে।
৬। কন্তুইট স্থাপনের সময় একটির উপর অন্যটি যাতে না বসে সে দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে।
৭। কন্ডুইটের ধারালো প্রান্তগুলো রিমার ফাইল দ্বারা মসৃণ করতে হবে যাতে তারের ইনসুলেশন নষ্ট না হয়।
৮। জি আই কন্ডুইটের মধ্যে দিয়ে ফিস ওয়্যারের মাধ্যমে সাবধানে তার বা ক্যাবল টানতে হবে।
৯। কন্ডুইটের মধ্যে যেন পানি প্রবেশ না করে এবং পানি না আটকে থাকে, তার জন্য সামান্য ঢালু করে কন্ডুইট বসাতে হবে।
১০। ছাদে আর্থিং সংযুক্ত করতে হবে ।
ক) বড় স্থাপনার টেলিফোন লাইন, সাউন্ড সিস্টেম, সিসি টিভি ইত্যাদির জন্য আলাদাভাবে পাইপ স্থাপন করতে হবে যাতে ইলেকট্রিক লাইনে কোন সমস্যা হলেও এগুলো নিরাপদ থাকে।
খ) লাইটনিং বা বজ্রপাত প্রটেকশনের ডাউন কন্ডাকটরের জন্য কমপক্ষে প্রতি ১০০ ফুট পর পর কলামে একটি করে পি.ভি.সি পাইপ ছাদ পর্যন্ত স্থাপন করে রাখা উচিত।
গ) মেইন ক্যাবল ইনকামিং-এর জন্য গ্রাউন্ড লেভেলের উপরে রিটেইনিং ওয়ালে পাইপ স্থাপনের জন্য জায়গায় ছিদ্র রাখতে হবে।
ঘ) ইলেকট্রিক ও টেলিফোনের জন্য সাব-স্টেশন থেকে লিফ্ট ফ্লোর পর্যন্ত আলাদা কন্ডুইট পাইপ স্থাপন করে রাখতে হবে।
ঙ) প্রতিটি ড্রপ থেকে কলামের চার পাশে পাইপ রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রতিটি এসডিবি ইন্টার কানেক্ট করা হয়েছে কিনা। কলামের চারপাশে ছাদে, সুইচ বোর্ড এবং সকটে আউটলেট পর্যন্ত ড্রপ রাখতে হবে এবং প্রতিটি পাইপের শেষে দেয়ালে ড্রপ করতে হবে।
চ) স্কার্টিং লেভেল পর্যন্ত ঢালাই-এর পূর্বেই সুইচ, পাওয়ার, টেলিফোন, কম্পিউটার নেট-ওয়ার্কিং ইত্যাদির জন্য আলাদা আলাদা পাইপ স্থাপন করতে হবে।
ছ) পাইপ ক্রসিং এর স্থানে ছাদের টপ রডের সাথে দুই ফুট পর পর কয়েকটি এক্সট্রা রড বেঁধে দেয়া প্রয়োজন ।
কন্ডুইটের তারের সংখ্যা ও সাইজ অনুযায়ী কন্ডুইটের সাইজ নির্ধারণ করা হয়। বিভিন্ন গ্রেডের তার বিভিন্ন সাইজের কন্ডুইটের মধ্যে কয়টা নেওয়া যেতে পারে, তা নির্ভর করে তারের সংখ্যা এবং তার টানার সুবিধার উপর। ২৫০/৪৪০ ভোল্ট এবং ৬৬০/১১০০ ভোল্ট গ্রেডের ভি আই আর ব্রেইডেড ও কম্পাউন্টেন্ড এবং পি ভি সি ক্যাবলের জন্য প্রযোজ্য তার এর কন্ডুইটের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো। কন্ডুইটের মধ্য দিয়া টানা তারের সংখ্যা নির্ণয়ে নিচের দুইটি তালিকায় বর্ণিত নিয়ম প্রয়োগ করতে হয়।তারের সাইজ ও সংকেত নম্বর তালিকা দেওয়া হলো।
প্রায় সকল বিল্ডিং, কলকারখানায় কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পিভিসি অথবা জিআই কণ্ডুইট দেয়ালে বসাতে হলে প্রথমে দেয়ালে গ্রুভ বা খাঁজ কাটতে হবে। দেয়ালে গ্রুভ বা খাঁজ কাটার প্রয়োজনীয় টুলস ও সবঞ্জামাদি সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও পদ্ধতি অনুসারে সতর্কতার সাথে গ্রুভ কাটিং এর কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
দেয়ালে গ্রুভ বা খাঁজ দু'ভাবে কাটা যায়। যেমন-
১। ইলেকট্রিক ওয়াল কাটার বা ওয়াল চেঞ্জার এর মাধ্যমে,
২। চিজেলের মাধ্যমে;
চিজেলের মাধ্যমে গ্রুভ কাটিং এর প্রক্রিয়া নিচে উল্লেখ করা হলো-
১। দেয়ালে গ্রুভ কাটার জন্য প্রয়োজনীয় টুলস ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করতে হবে।
২। দেয়ালে চিহ্নিত নকশা বা লে-আউট অনুযায়ী গ্রুভ কাটতে হবে। সে লক্ষ্যে প্রথমে ঠিকভাবে দেয়ালে দাগ টেনে নিতে হবে এবং পূর্ব থেকে বা ছাদ ঢালাইয়ের সময় ছাদে প্রয়োজনীয় কন্ডুইট বসানো থাকে ।
৩। ছিটকে পড়া ক্ষুদ্র ভাঙ্গা অংশ হতে চোখ রক্ষা করার জন্য চোখে নিরাপদ গগলস পরিধান করতে হবে, যা চিত্র-২.১১ তে দেখানো হয়েছে।
৪। চিহ্নিত স্থানের উপরের একটি কোণায় ২৫ মি. মি. চওড়া ব্লেডযুক্ত চিজেল দৃঢ়ভাবে দেয়ালের বহিঃপৃষ্ঠের সাথে প্রায় সমকোণে স্থাপন করতে হবে, যা চিত্র-২.১২তে দেখানো হয়েছে।
৫। হাতুড়ির প্রতি আঘাতে চিজেলের চওড়া পরিমাণ অংশ কাটতে কাটতে বর্গাকৃতি খাঁজের চিহ্নিতরেখা বরাবর অগ্রসর হতে হবে।
৬ । এখন চিজেলকে আনুমানিক ৪৫ ডিগ্রি কোণে ধরে বর্গাকৃতি চিহ্নিত স্থানের ভিতর হতে খাঁজে খাঁজে সমান্তরালে এবং ক্রমাগতভাবে কাটতে হবে। বীজের প্রয়োজনীয় গভীরতায় পৌঁছা পর্যন্ত বারবার এ প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। বাজের গভীরতা অপেক্ষাকৃত বেশি হলে এর কেন্দ্রবিন্দু হতে ফাটা আরম্ভ করে প্রাক্ষের দিকে অগ্রসর হওয়া সুবিধাজনক।
৭। দেয়ালে স্থাপিত এবং প্লাস্টার করার একটি পিভিসি মাউন্টিং ব্লক অনুসারে কাটতে হবে। ৮। মাউন্টিং ব্লক এবং ওয়াল বক্সের জন্য দেয়ালে খাঁজ কাটার কাজ সম্পন্ন হলে, কড়ুইটের জন্য খাঁজ কাটার কাজ আরম্ভ করা যায়। এ কাজের জন্য ২৫ মি. মি. চওড়া রেডসম্পন্ন চিােগ ব্যবহার করা যায়। ১। বীজের ভিতর দেয়ালগুলো ২৫ মি. মি. চওড়া রেডসম্পন্ন চিভেলের সাহায্যে পরিষ্কার করাতে হবে।
ইলেকট্রিক ওয়াল কাটার বা ওয়াল চেয়ার এর মাধ্যমে এন্ড কাটিং এর প্রক্রিয়া নিচে উল্লেখ করা এলো- ওয়াট কাটার বৈদ্যুতিক মোটর চালিত একটি মেশিন বা কাটিং ব্লেড এর মাধ্যমে দেয়াল কাটা যায়। সাধারণত ১২০০ ওয়াট হতে বিভিন্ন পাওয়ার এর ওয়াল কাটার পাওয়া যায়। আধুনিক ওয়াল কাটার জন্য বা এস্ত করার জন্য ওরাল চেজার নামে মেশিন পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে খুব সহজেই দ্রুত করা যায়। প্রয়োজনমত এর গ্রন্থ ও গভীরতা সেট করা যায়। মেশিন এর সাথে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার থাকায় ময়লাগুলি একটি পাত্রে জমা হয় এবং ধুলাবালি উৎপাদন কমানোর জন্য ওয়াটার পাম্প থাকে যার মাধ্যমে দেয়াল কাটার জায়গায় পানি সরবরাহ করে, ফলে ভেজা থাকার কারণে ধূলাবালি হয় না। নিম্নে দেয়ালে গ্রন্ড করার জন্য প্রয়োজনীয় বজ্রপাতির চিত্র দেওয়া হলো।
দেয়ালে গ্রুভ করণ: ইটের দেয়ালে এত কর্তন এর পূর্বে, লে-আউট অনুসারে পরিমাপের মাধ্যমে কর্তনের হারা চিহ্নিত করে নিতে হবে। প্রয়োজনের বেশি বেন কর্তন না করা হয়, অতিরিক্ত কর্তনের ফলে বিল্ডিং এর ক্ষতি হতে পারে। কোনভাবেই বিল্ডিং এর কলাম বা পিলার কর্তন করা যাবে না। কাজ করার সময় দেয়াল ভিজিয়ে নিলে ধূলাবালি কম হবে। দেয়ালের কৌনিকভাবে খাঁজ কাটা যাবেনা। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী পরিধান করতে হবে। দেয়াল কর্তনের সময় মেশিনকে শক্তভাবে ধরতে হবে। এত কাটার সময়ের কিছু ছবি দেয়া হলো যা অনুসরণ করা যেতে পারে।
কছূইট ওয়্যারিং করার ক্ষেত্রে এন্ড কাটিং এর সময় যে বিষয়গুলোতে সতর্কতা মানতে হয় সেগুলো হলো-
১। প্রয়োজনীয় টুলস ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করতে হবে।
২। হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস পড়ে কাজ করতে হবে।
৩। নকশা বা লে-আউট অনুযায়ী খাঁজ কাটতে হবে।
৪। সঠিকভাবে দেয়ালে দাগ টেনে নিতে হবে।
৫। গ্রুভ কাটার সময় সাবধানে হ্যামারের সাহায্যে চিজেলের মাথায় আঘাত করতে হবে, যেন হাতে না লাগে ।
৬। গ্রোভের কেন্দ্রবিন্দু হতে কাটা আরম্ভ করে প্রান্তের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
কন্ডুইট দেয়ালে বসাতে হলে প্রথমে দেয়ালে গ্রুভ বা খাঁজ কাটতে হবে। দেয়ালে গ্রুভ বা খাঁজ কাটার প্রয়োজনীয় টুলস ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও পদ্ধতি অনুসারে সতর্কতার সাথে গ্রুভ কাটিং এর কাজ সম্পন্ন করতে হয়। ভার্টিক্যাল বা উলম্ব দেয়ালের ক্ষেত্রে দেয়ালের গভীরতার এক তৃতীয়াংশ নীচু পর্যন্ত গ্রুভ এর গভীরতা করতে হয়, যেমন-১০০ মিমি চওড়া দেয়ালের ক্ষেত্রে গ্রোভের গভীরতা হবে ৩৩ মিমি। গ্রোভের প্রশস্ত সাধারণত ০.৩৭৫ - ১.৫" পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
ছাদ ও দেয়ালের মধ্যে খাঁজ কেটে কন্ডুইট পাইপ (জিআই/ পিভিসি ) বসিয়ে যে ওয়্যারিং করা হয়, তাকে কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং বলা হয়। পাইপ বসানোর পর প্লাস্টার করে পাইপ ঢেকে দেওয়া হয়, ফলে এ ওয়্যারিং চোখে দেখা যায় না। কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং এ জিআই বা পিভিসি পাইপ ব্যবহার করা হয়। অবকাঠামো নির্মাণে ছাদ ঢালাইয়ের আগে ওয়্যারিং লে-আউট অনুযায়ী কন্ডুইট স্থাপন করতে হয়। দেয়াল প্লাস্টারের আগে দেয়ালে খাঁজ কেটে ডিবি বক্স, মেইনসুইচ, এসডিবি, কণ্ডুইট বসানো জন্য জায়গা করতে হয়, যার ফলে ফিটিংসসমূহ বাহির থেকে দেখা যাবে না। সকল কাজই ওয়্যারিং লে-আউট অনুযায়ী হতে হবে। আধুনিক বাড়ি-ঘর, দালান-কোঠা, অফিস-আদালত ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ ওয়্যারিং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পরিবাহী তারকে বাহিরের আঘাত থেকে রক্ষার জন্য এবং দুর্ঘটনা কমানোর জন্য এ ধরনের ওয়্যারিং খুব উপযোগী। কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং এ ব্যয় বেশি হলেও দেখার সৌন্দর্যসহ অন্যান্য সুবিধা বেশি।
দেয়ালে কনসিল্ড কন্ডুইট স্থাপন: ইটের দেয়ালের উপর ওয়াল কাটার এর মাধ্যমে কর্তনকৃত খাঁজে কন্ডুইট বা পিভিসি পাইপ বসাতে হয়। পাইপ গুলো তারকাটা বা হুক দ্বারা আটকিয়ে নিতে হয়।
গ্রীষ্ম প্রধান দেশে গরমের সময় বেশি গরম আর শীতের সময় বেশি ঠান্ডা, আবার অনেক জায়গায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে, যেমন- বাংলাদেশে। যার কারণে পাইপ বা কন্ডুইট এর ভিতর পানি জমা হয়। এ কারণে সবদেশেই কন্ডুইট স্থাপনের জন্য খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কড়ুইটগুলো ভূমির দিকে একটু নিচু করে রাখতে হয়, যেন ভিতরে পানি জমা হলে বেরিয়ে যেতে পারে। খোলা জায়গা দিয়ে কড়ুইটনিতে হলে দেয়ালে না ঠেকিয়ে, দেয়ালে "গুলির" ওপর ছোট ছোট কাঠের টুকরো এঁটে, তার ওপর দিয়ে কন্ডুইট নিয়ে যাওয়া উচিত। এতে কন্ডুইটের চার পার্শ্বে বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে, ফলে পানি কম জমে। এছাড়া কনসিল্ড কন্ডুইট এর ভিতর ক্যাবল এমন ভাবে স্থাপন করতে হয়, যেন কন্ডুইটের তিন ভাগের এক অংশ ফাঁকা থাকে, বাতাস আসা যাওয়ার জন্য ।
কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং এর প্রক্রিয়া নিচে উল্লেখ করা হলো- • প্রয়োজনীয় পিপিই নির্বাচন করে সংগ্রহ করব এবং পরিধান করব।
• চিত্র অনুযায়ী সমস্ত মালামাল এবং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করব।
• প্লান অনুসারে মাপ নিয়ে সুতা দিয়ে বা দাগ কেটে ছাদে লে-আউট তৈরি করব।
• ড্রইং অনুসারে প্রথমে রাইজার হতে এসডিবি এর জন্য পাইপ বসাতে হবে।
• এসডিবি হতে সুইচ বোর্ড এবং পাওয়ার পয়েন্ট, এসি এর জন্য আলাদা আলাদা পাইপ স্থাপন করব।
• সুইচ বোর্ড হতে বিভিন্ন লোডে পাইপ স্থাপন করব।
• পাইপ গুলিকে রডের সাথে শক্ত করে তার অথবা ক্যাবল টাই দিয়ে আটকাৰ ।
• পাইপের জুড়াগুলির সকেটে আটা দিয়ে লাগাব এবং টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দিব যেন কোন ভাবে সিমেন্ট প্রবেশ করতে না পারে।
• পাইপ গুলি ছাদের বাহিরের দিকে ঢালু রাখতে হবে এবং সকল সার্কুলার বা পুলবক্স গুলির নিচে পেপার দিয়ে রাখব।
• কন্ডুইটের সাথে প্রয়োজনীয় ফিক্সার সংযুক্ত করব।
কাজ শেষে কাজের জায়গা পরিষ্কার করব।
• কাজ শেষে সমস্ত মালামাল স্টোরে জমা দিব।
কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং করার ক্ষেত্রে কন্ডুইট স্থাপন করা, ফিসওয়্যার ঢুকানো, তার টানাসহ বিভিন্ন কাজে যে বিষয়গুলোতে সতর্কতা মানতে হয় সেগুলো হলো-
১। হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস পড়ে কাজ করতে হবে।
২। কন্ডুইট বসানোর সময় পরিবাহী তার টানার জন্য ফিস ওয়্যার ঢুকাতে হবে।
৩। গ্রুভ কাটার সময় সাবধানে হ্যামারের সাহায্যে চিজেলের মাথায় আঘাত করতে হবে, যেন হাতে না লাগে।
৪। সাবধানে কন্ডুইট বাঁকাতে হবে, বাঁকানোর সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
৫। সকেট, টি, বেন্ড ইত্যাদি সঠিকভাবে ও আস্তে আস্তে লাগাতে হবে।
৬। কন্ডুইট স্থাপনের সময় একটির উপর অন্যটি যাতে না বসে।
৭। কন্ডুইটের ধারালো প্রাস্তগুলো রিমার ফাইল দ্বারা মসৃণ করতে হবে যাতে তারের ইনসুলেশন নষ্ট না হয় ।
৮। জি আই কন্ডুইটের মধ্যে দিয়ে সাবধানে তার/ক্যাবল টানতে হবে।
৯। কন্ডুইটের মধ্যে যেন পানি প্রবেশ না করে এবং পানি না আটকে থাকে, তার জন্য সামান্য ঢালু করে কন্ডুইট বসাতে হবে।
১০। আর্থিং ভালো হতে হবে এবং ধাতব সরঞ্জাম যেন বড়ি না হয় তা দেখতে হবে।
১১। মরিচা হতে মুক্ত রাখার জন্য বাইরের প্যাচগুলোতে রং করতে হবে।
কনসিল্ড কন্ডুইট ওয়্যারিং করতে প্রয়োজনীয় সাইজের কন্ডুইটের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো এ অধ্যায়ে ২.৩.৩ অংশে আলোচনা করা হয়েছে।
দেয়ালের বহিঃ পৃষ্ঠে বা ছাদের বহিঃ পৃষ্ঠে পাইপ হুক বা স্যাডল এর সাহয্যে কন্ডুইট পাইপ বসিয়ে, এদের ভিতর দিয়ে বৈদ্যুতিক ক্যাবল বা ইনসুলেটেড তার স্থাপন করে কন্ডুইট ওয়্যারিং করা হয়। পরিবাহী তার বা ক্যাবলকে যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষার জন্য এবং ওয়্যারিং দীর্ঘস্থায়ী ও সৌন্দর্য বাড়াতে সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং করা হয়। বাজারে সাধারণত ৩ মিটার ও ৬ মিটার লম্বা বিভিন্ন সাইজের কন্ডুইট পাইপ পাওয়া যায়।
কণ্ডুইট পাইপ দেয়ালের উপর দিয়ে নিয়ে যে ওয়্যারিং করা হয়, তাকে সারফেস কন্ডুইট ওয়্যারিং বলে। পরিবাহী তার বা ক্যাবলকে যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষার জন্য এবং ওয়্যারিং দীর্ঘস্থায়ী, রাসায়নিক বিক্রিয়া ও আগুনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সারফেস কন্ডুইট করা হয়। বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর ক্ষেত্রে যে পাইপ ব্যবহার করা হয় তাহাকে কন্ডুইট বলা হয়। এটি সাধারণত স্টিল এবং পিভিসি পাইপ হয়। এটি বিভিন্ন সাইজ এবং গ্রেডের হয়ে থাকে।
• কাজের সময় হ্যান্ড গ্লোবস, গগলস ব্যবহার করতে হবে।
• নকশা বা লে-আউট অনুযায়ী কন্ডুইট স্থাপন করতে হবে।
• বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
সাধারনত আধা-পাকা বাসা বা স্বল্প মূল্যের পাকা বাড়িতে চ্যানেল ওয়্যারিং করা হয়। চ্যানেলের নিচের অংশ বেশি জায়গা থাকে যাতে ক্যাবল স্থাপন করা হয়। সাধারনত ১ ফুট দূরে দূরে স্ক্রু দিয়ে চ্যানেলের নিচের অংশ দেয়ালে আটকিয়ে দিতে হয়। ২টি ক্যাবলের জন্য ১/২” চ্যানেল, ৩/৪টি ক্যাবলের জন্য ৩/৪" চ্যানেল এবং এর অধিক ক্যাবলের জন্য পরবর্তী সাইজের চ্যানেল ব্যবহার করা হয়। সাধারনত চ্যানেলে ক্যাবল বসানোর পর যেন ১/৪" অংশ ফাঁকা থাকে।
চ্যানেল ৯০ ডিগ্রি কোণে বসানো হয়। চ্যানেল ৯০ ডিগ্রি কোণে বসাতে হলে দুটি ক্যাবলের প্রান্তসমূহ ট্রাই- স্কোয়ারের সাহায্যে ৪৫ ডিগ্রি কোণে কেটে নিতে হবে। চ্যানেলের সাইজ সাধারণত ১/২", ৩/৪”, ১", ১.৫” এবং ২” হয়। চিত্রে-২.১৮ এ ১টি এনার্জি মিটার, ১টি মেইনসুইচ, ১টি ফ্যান, ২টি বাতি ও ১টি কম্বাইন সকেট নিয়ন্ত্রণের চ্যানেল ওয়্যারিং দেখানো হয়েছে।
বর্তমানে পিভিসি চ্যানেল ব্যবহার করে সাধারণ বাসা-বাড়ির বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং কাজ করা হচ্ছে। চ্যানেল ওয়্যারিং দেখতে ভালো, খরচ কম, তুলনামূলক সহজ এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজে করা যায়। প্লাষ্টিক চ্যানেল দ্বারা এ ধরনের ওয়্যারিং করা হয় বলে, একে চ্যানেল ওয়্যারিং বলা হয়। আমাদের দেশে বাসা- বাড়ির শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগই চ্যানেল ওয়্যারিং করা হয়।
এ জাতীয় ওয়্যারিং বিভিন্ন সাইজের পিভিসি চ্যানেল ব্যবহার করা হয়। চ্যানেল ওয়্যারিং এর ক্ষেত্রে দেয়ালে, ছাদে রাওয়াল প্লাগ আটকিয়ে এর উপর দিয়ে প্লাস্টিক চ্যানেল আটকিয়ে এ চ্যানেলের খাঁজের মধ্যদিয়ে ক্যাবল বা পিভিসি তার স্থাপন করা হয়। এ ওয়্যারিং এ সাধারণত ২৫০ / ৪৪০ ভোল্ট গ্রেডের পিভিসি সিঙ্গেল বা টু-ইন কোর তার ব্যবহার করা হয়।
ওয়্যারিং এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক তার স্থাপন করার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পরিমাণের চ্যানেল ব্যবহার করা হয়।
সারফেস চ্যানেল ওয়্যারিং করার পদক্ষেপসমূহ নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো-
১। ওয়্যারিং লে-আউট করতে হবে।
২। কাজের জন্য প্রয়োজনীয় টুলস সংগ্রহ করতে হবে।
৩। লে-আউট অনুযায়ী সুতার মাধ্যমে রঙিন চকের গুড়া দিয়ে যে সমস্ত জায়গা দিয়ে চ্যানেল যাবে সে সমস্ত
৪। জায়গায় দাগ টানতে হবে।
৪। ওয়্যারিং লে-আউট অনুযায়ী চ্যানেল, সুইচ বোর্ড, জাংশন বক্স, রাওয়াল প্লাগ, ব্লু ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।
৫। লে-আউট অনুযায়ী দেয়াল ও ছাদে চিহ্নিত রেখার উপরে চ্যানেল, সুইচ বোর্ড এবং জাংশন বক্স বসানোর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী (চ্যানেলের বেস আটকানোর জন্য ৬০ সে. মি. থেকে ৭০ সে. মি. পর পর রাওয়াল প্রাগ স্থাপন করতে হবে।
৬। স্ক্রু দিয়ে প্রয়োজনীয় সাইজের চ্যানেলের বেস আটকাতে হবে।
৭। তারপর নির্দিষ্ট স্থানে সুইচ বোর্ড বেস, জাংশন বক্স বেস ইত্যাদি স্ক্রু দিয়ে মজবুত ভাবে আটকাতে হবে।
৮। বাঁকের স্থানে কর্নার বা বেন্ড বসাতে হবে।
৯। দেয়াল ছিদ্র করে তার নিতে পিভিসি পাইপ বসাতে হবে।
১০। চ্যানেল বেস আটকানোর পর চ্যানেলে তার টেনে একই সাথে চ্যানেল কভার লাগাতে হবে।
১১। তারপর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সরঞ্জাম যেমন সুইচ, সকেট, হোল্ডার, ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি লাগাতে হবে।
১২। উল্লেখিত ধাপে ওয়্যারিং করার পর ওয়্যারিং পরীক্ষা করে কাজ সমাপ্ত করতে হবে।
সারফেস চ্যানেল ওয়্যারিং করার ক্ষেত্রে চ্যানেল স্থাপন করা, তার টানাসহ বিভিন্ন কাজে যে বিষয়গুলোতে সতর্কতা মানতে হয় সেগুলো হলো-
১। হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস পড়ে কাজ করতে হবে।
২। লে-আউট অনুযায়ী সুতার মাধ্যমে রঙিন চকের গুড়া দিয়ে যে সমস্ত জায়গা দিয়ে চ্যানেল যাবে সে সমস্ত জায়গায় দাগ টানতে হবে।
৩। লে-আউট অনুযায়ী দেয়াল ও ছাদে চিহ্নিত রেখার উপরে চ্যানেল, সুইচ বোর্ড এবং জাংশন বক্স বসানোর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী রাওয়াল প্লাগ স্থাপন করতে হবে।
৪। ওয়্যারিং করার পর ওয়্যারিং পরীক্ষা করে কাজ সমাপ্ত করতে হবে।
যে কোন বৈদ্যুতিক কাজ করতে বা যন্ত্র ব্যবহারে প্রথমেই একান্ত প্রয়োজন নিরাপত্তা। বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক কন্ট্রোলিং ও প্রটেকশন দেয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রতিটি বাড়ী, অফিস, আদালত, কলকারখানা, বিদ্যালয়সহ সকল স্থাপনায় কন্ট্রোলিং ও প্রটেকটিভ ডিভাইসের দীর্ঘস্থায়িত্ব, কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে ডিভাইসের উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যয় হ্রাস ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। এ অধ্যায়ে কন্ট্রোলিং ও প্রটেকটিভ ডিভাইস স্থাপন এবং এদের প্রকারভেদ, গুরুত্ব ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হলো- এ অধ্যায় শেষে আমরা-
• কাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারব;
• সুইচ ইনস্টল করতে পারব;
• ফ্যান রেগুলেটর ইনস্টল করতে পারব;
• মেইন সুইচ ইনস্টল করতে পারব;
• কাট-আউট বা ফিউজ ফিক্স-আপ করতে পারব ও সরবরাহের সঙ্গে সংযোগ করতে পারব;
• মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার (MCB) ইনস্টল করতে পারব;
• টুলস ও ইকুইপমেন্ট সংরক্ষণ করতে পারব।
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা বৈদ্যুতিক কন্ট্রোলিং ও প্রটেকটিভ ডিভাইস; যেমন: বিভিন্ন প্রকার সুইচ, ফ্যান রেগুলেটর, কাট-আউট বা ফিউজ, মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার (MCB) ইত্যাদি স্থাপন করে বৈদ্যুতিক সংযোগ সফলভাবে সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানা প্রয়োজন।
বর্তমানে বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির বিভিন্ন ধরনের কন্ট্রোলিং ডিভাইস পাওয়া যায়। যে কোন বৈদ্যুতিক ডিভাইস ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে বিদ্যুৎ এর ব্যবহারে এর সঠিক নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকা খুব প্রয়োজন। এ অধ্যায়ে বৈদ্যুতিক নিয়ন্ত্রণ ডিভাইস বিষয়ে ধারণা দেয়া হলো।
আমরা কন্ট্রোল বলতে সাধারণত বুঝি কোন কিছুকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে রাখা বা যখন প্রয়োজন তখন ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করা। কিন্তু বৈদ্যুতিক সিস্টেমে কন্ট্রোলিং ডিভাইস হিসেবে সাধারণত সুইচ ও সার্কিট ব্রেকারের অপারেশনকে বুঝে থাকি। বৈদ্যুতিক সার্কিটে লোডের সংযোগ ও বিচ্ছিন্ন করার কৌশলকেই কন্ট্রোল বলে। যে সকল ফিটিংস বা ডিভাইস ব্যবহার করে সার্কিটের কারেন্ট প্রবাহকে অফ-অন করা যায়, সেগুলোকে কন্ট্রোলিং ডিভাইস বলে।
বৈদ্যুতিক সিস্টেমে লোডের যথাযথ ব্যবহারের জন্য কন্ট্রোলিং ডিভাইস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যদি নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র না থাকতো তাহলে বৈদ্যুতিক সিস্টেমে কোন লোড চালু করলে শুধু চালুই থাকতো বা বন্ধ করলে শুধু বন্ধই থাকতো। আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাধীনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবহার করতে পারতাম না। নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যায়। যেমন-শীতকালে ফ্যানের প্রয়োজন হয় না, তাই ফ্যান বন্ধ রাখা হয়। দিনের বেলায় তেমন আলোর প্রয়োজন হয় না, তাই লাইট এর সুইচ বন্ধ রাখি। তাছাড়া কন্ট্রোলিং ডিভাইস বিহীন সার্কিট আদৌ নিরাপদ নয়। তাই বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় প্রত্যেক ক্ষেত্রেই কন্ট্রোলিং ডিভাইস ব্যবহার করা হয় । সুতরাং নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে বৈদ্যুতিক সার্কিটে ব্যবহৃত নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। সকল কন্ট্রোলিং ডিভাইসকে এদের গঠন ও কার্যনীতি অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১। মেকানিক্যাল কন্ট্রোলিং ডিভাইস বা সুইচ,
২। ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কন্ট্রোলিং ডিভাইস এবং
৩। ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস
মেকানিক্যালি নিয়ন্ত্রিত সুইচকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) নাইফ সুইচ ও (খ) টাম্বলার সুইচ।
• গঠন, কার্যকারিতা এবং ব্যবহার অনুযায়ী নাইফ সুইচ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যথা-
১. কুইক-ব্রেক সুইচ
২. সিঙ্গেল ব্রেক সুইচ
৩. ট্রিপল পোল সুইচ
৪. ভাবল ব্রেক সুইচ
৫. স্নো-ব্রেক সুইচ
৬. ডাবল পোল সুইচ
৭. আয়রন ক্ল্যাড সুইচ
৮. সিঙ্গেল পোল সুইচ
• টাম্বলার সুইচকে গঠন, কার্যকারিতা এবং ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা—
১. ওয়ান ওয়ে সুইচ
২. টু-ওরে সুইচ
৩. ইন্টারমেডিয়েট সুইচ
৪. পুশ সুইচ
৫. রোটারি সুইচ
৬. বেড সুইচ
৭. পুশ সুইচ
৮. পুনপুন সুইচ
• ডোস্টেজ গ্রেড অনুযায়ী উল্লিখিত সুইচসমূহকে সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক) ২৫০ ভোল্ট নরমাল গ্রেডের সুইচ ও
খ) ৫০০ ভোল্ট বা হাই প্রেতের সুইচ।
কারেন্ট বহন করার ক্ষমতা অনুযায়ী সুইচকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়।
যেএ ৫, ১০, ১৫, ২০, ৩০, ৬০, ১০০ এবং ১৫০ A সুইচ ইত্যাদি। নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র হিসেবে সাধারণত সুইচকে বেশি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু বর্তমানে সুইচ ছাড়াও সার্কিট ব্রেকার, এমসিবি, টাইমার ও রিলে, লজিক গেট ইত্যাদি ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত বেশি ব্যবহৃত সুইচগুলো-
কন্ট্রোলিং ডিভাইসের ব্যবহার সর্বত্র বিরাজমান। যেখানে বিদ্যুৎ আছে, সেখানে নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করা হয় । উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণ এবং গ্রাহক পর্যায়ে এটির ব্যবহার বিদ্যমান। নিচে বিভিন্ন ধরনের সুইচের ব্যবহার উল্লেখ করা হলো।
ক) নাইফ সুইচ।
পো-ব্রেক নাইফ সুইচ: মধ্যম মানের কারেন্টের জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। নিম্ন মানের ও উচ্চ মানের কারেন্ট ব্যবস্থাপনায় সাধারণত এ সুইচ ব্যবহার করা হয় না।
কুইক ব্রেক নাইফ সুইচ: এ সুইচগুলো সাধারণত মেইন সুইচ বোর্ডে ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক মোটর সার্কিট, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক কন্ট্রোল সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সার্কিট হতে বিচ্ছিন্ন করতে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
মেইন সুইচ: বিদ্যুৎ মিটার বোর্ডের পর ব্যবহারকারীর সমগ্র সার্কিটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
সিঙ্গেল পোল সুইচ : লাইনের শুধু একটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
ডাবল পোল সুইচ: লাইনের দুইটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
ট্রিপল পোল সুইচ: লাইনের তিনটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
আয়রন ক্ল্যাড (আই.সি.) সুইচ: আবাসগৃহে বা কারখানায় বা অনুরূপ স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বা বিচ্ছিন্ন করার জন্য মিটার বোর্ডের পরে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
(খ) টাম্বলার সুইচ: সাধারণ বাতি জ্বালাতে এবং হিটার, ইস্ত্রি প্রভৃতি পাওয়ার সার্কিটে বিভিন্ন অ্যাম্পিয়ারের টাম্বলার সুইচ ব্যবহার করা হয়।
ওয়ান-ওয়ে সুইচ: এ ধরনের সুইচ দুইটি তারের মধ্যে সংযোগ সাধন এবং বিচ্ছিন্ন করবার জন্য ব্যবহৃত হয়। সাধারণত বাতি, পাখা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আবাসিক ঘরে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।
টু-ওয়ে সুইচ: এ সুইচগুলো সাধারণত একটি বা কয়েকটি বাতি একসঙ্গে দুই জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ উদ্দেশ্যে সিঁড়ি ঘরের বাতি বা বড় বড় হলো ঘরে যেখানে দুই জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়, সে সমস্ত জায়গায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
ইন্টারমিডিয়েট সুইচ: কোন বাতিকে তিন বা তার অধিক জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করতে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। এ রকম সার্কিটের দুই প্রান্তে দুইটি টু-ওয়ে সুইচ এবং মাঝখানে প্রয়োজন অনুসারে এক বা একাধিক ইন্টারমিডিয়েট সুইচ ব্যবহার করতে হয়। এটি সাধারণত সিঁড়ি ঘরের বাতি জ্বালানো নিভানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
পুশ পুল সুইচ: এ ধরনের সুইচ সাধারণত টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়।
রোটারি সুইচ: এ ধরনের সুইচ সাধারণত বৈদ্যুতিক ওভেন, কুকার, হিটার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। মোটরের ঘূর্ণনের দিক পরিবর্তন, বেগ পরিবর্তন এবং সার্কিট কন্ট্রোল করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
বেড সুইচ: সাধারণত বিছানায় শুয়ে বাতি জ্বালানো এবং নিভানের জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুশ বাটন সুইচ: এ সুইচগুলো সাধারণত বৈদ্যুতিক মোটরে স্টার্টারের সাথে, বেল সার্কিটে, ল্যাম্প সার্কিটে ইত্যাদিতে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।
গ) ইলেকট্রো- ম্যাগনেটিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস:
ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক সুইচ বা ম্যাগনেটিক কন্ট্যাক্ট সাধারণত বৈদ্যুতিক মোটর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রিলে সাধারণত কোন নিয়ন্ত্রণ সার্কিটকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
• ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস বা ইলেকট্রনিক সুইচ: আজকাল বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সুইচ বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো কোন সার্কিটকে লজিক্যাল কন্ট্রোল, তুলনামূলক কন্ট্রোল, টাইমিং কন্ট্রোল, রিমোট কন্ট্রোল, মাইক্রো কন্ট্রোল ইত্যাদি করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
• চেঞ্জ ওভার সুইচ: একই লোড বিভিন্ন লাইন বা ফিডার থেকে এবং প্রয়োজনে নিজস্ব জেনারেটার থেকে চালনার জন্য চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করা হয়। যেখানে লোড সব সময় চালু রাখা প্রয়োজন সেখানে চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করা হয়, যেন কোন লাইন লোডশেডিং হলে সাথে সাথে চেঞ্জ ওভার সুইচ এর পজিশন পরিবর্তন করে সিস্টেম সচল রাখা যায়।
• চেঞ্জ ওভার সুইচের কার্যকারিতা: মাছের আড়ৎ (যেখান ক্যাপাসিটিভ হিটিং দিয়ে কাজ করানো হয়) এবং খাবার তৈরির ফ্যাক্টরিতে চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করে এক লাইন হতে লোড চেঞ্জ করে জেনারেটর লাইন দেওয়া হয়। আবার যখন সাপ্লাই লাইন চলে আসে তখন পুনরায় চেঞ্জ ওভারের মাধ্যমে লাইন দেওয়া হয়। চিত্রে সিঙ্গেল ফেজ চেঞ্জ ওভার দেখানো হলো।
চেঞ্জ ওভার সুইচটি যখন এ অবস্থানে আছে তখন লোডটি মেইন লাইন দিয়ে চলছে। যখন মেইন লাইন অফ হবে তখন সুইচটি b অবস্থানে রেখে জেনারেটর চালু করলে লোডটি জেনারেটরের লাইনে চলবে। চেঞ্জ ওভার সুইচ এভাবে কাজ করে।
প্রতিটি কাজের শুরুতেই একান্ত প্রয়োজন নিরাপত্তা। যে কোন যন্ত্র ব্যবহারে প্রটেকশন ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে যে কোন অস্বাভাবিক ঘটনার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে সিস্টেম বিচ্ছিন্ন করতে হয়। এ কাজের জন্য প্রটেকটিভ ডিভাইস হিসেবে ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার, রিলে ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে রক্ষণ যা (Protective Device) এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তার বিষয়টি খুব প্রয়োজন। শর্ট সার্কিট বা ওভার লোড জনিত ত্রুটিতে নিরাপত্তার জন্য বৈদ্যুতিক প্রটেকটিভ ডিভাইস কাজ করে। এ অধ্যায় পাঠে বৈদ্যুতিক প্রটেকটিভ ডিভাইস বিষয়ে ধারণা লাভ করা যাবে।
কোন বৈদ্যুতিক সার্কিটে শর্ট সার্কিট, আর্থফন্ট বা ওভারলোড এর কারণে পূর্ব নির্ধারিত কারেন্ট এর অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহের ফলে বর্তনীতে ব্যবহৃত ওয়্যারিং ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হবে। ঐ সকল ক্ষয়-ক্ষতি হতে সিসটোকে রক্ষা করার জন্য যে সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে প্রটেকটিভ ডিভাইস বলে। যেমন-ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি।
প্রটেকটিভ ডিভাইস বলতে আমরা বুঝি বৈদ্যুতিক সিস্টেমে যে সকল যা আপনা আপনিভাবে নিজে বিনষ্ট হয়ে বা অক্ষত থেকে অন্যকে রক্ষা করে থাকে। প্রটেকটিভ ডিভাইস আমাদের বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সকল সার্কিটকে রক্ষা করে থাকে। কারেন্ট বা ভোল্টেজের মান নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি হলেই নিজে পুড়ে গিয়ে বা অক্ষত রেখে সার্কিটকে রক্ষা এবং অনেক ক্ষতি সাধনের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সংযুক্ত সরগ্রামাদি, যন্ত্রপাতি অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রটেকটিভ ডিভাইসের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রটেকটিভ ডিভাইস প্রধানত দুই ধরনের । যথা:
১। সার্কিট ব্রেকার
২। ফিউজ।
'বৈদ্যুতিক সিস্টেমে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রটেকটিভ ডিভাইসগুলোর মধ্যে ফিউজ বহুল ব্যবহৃত।
ব্যবহারের স্থান, কাজের ধরন অনুযায়ী ফিউজ বিভিন্ন রকমের হয়।
সাধারণত বেশি ব্যবহৃত ফিউজগুলো-
১। রি-ওয়্যারেবল ফিউজ
২। কার্টিজ ফিউজ
৩। প্রাপ ফিউজ
৪। এইচ আর সি ফিউজ
৫। টাইম রিলে ফিউজ
৬। ওপেন ফিউজ
তাছাড়া প্রটেকটিভ ডিভাইস হিসেবে সার্কিট ব্রেকার অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সার্কিটের প্রটেকশন কাজের নিরাপত্তার জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। গঠন, ব্যবহারের স্থান, কাজের ধরন অনুযায়ী সার্কিট ব্রেকার বিভিন্ন রকমের হয়।
সাধারণত বেশি ব্যবহৃত সার্কিট ব্রেকারগুলো হলো-
১। এমসিৰি (MCB-Miniature Circuit Breaker)
২। এমসিসিবি (MCCB-Molded Case Circuit Breaker)
৩। আরসিসিবি (RCCB Recidual Current Circuit Breaker)
৪। ইএলসিবি (ELCB Earth Leakage Circuit Breaker )
৫। ওরেল সার্কিট ব্রেকার (OCB- Oil Circuit Breaker)
৬। এবার রাস্ট সার্কিট ব্রেকার (ABCB - Air Blast Circuit Breaker) এবং
৭। সালফার হেক্সা-ফ্লোরাইড (SF) সার্কিট ব্রেকার (SF6 Circuit Breaker)
শর্ট সার্কিট ফন্ট, আর্থ (ত্রুটি) জনিত কারণে মাত্রাতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহে সার্কিট ব্রেকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে ইএলসিবি কম মানের কারেন্টের ক্ষেত্রে এবং আরসিসিবি বেশি মানের কারেন্টের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। একই কাজে তুলনামূলক কম ব্যয় বিধায় এ ফিউজ ব্যবহার করা হয়। ১৮৯০ সালে বিজ্ঞানী এডিসন সার্কিটে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহের প্রটেকটিভ ডিভাইস হিসেবে ফিউজ আবিষ্কার করেন। বর্তমানে অনেক ধরনের উন্নত মানের ফিউজ এর ব্যবহার দেখা যায়। লো ভোল্টেজ সার্কিট ব্রেকারের তুলনায় ফিউজের ব্যবহার সুবিধাজনক। লো ভোল্টেজ এবং মধ্যম ভোল্টেজে ফিউজের ব্যবহার ব্যাপক এবং লাভজনক । কিছু বিষয়ে ফিউজ বা বিশেষ ধরনের ফিউজ, যেমন- এইচ আরসি (HRC) ফিউজ সার্কিট ব্রেকারের চেয়ে ভালো। সঠিকমানের ফিউজ নির্ধারণ, ফিউজের পরিবর্তন, হাই ভোল্টেজে ফিউজের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে ফিউজ ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান।
বৈদ্যুতিক সার্কিটে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রটেকটিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
১। সুইচ বোর্ডে প্রটেকটিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
২। মিটারের পর মেইনডিস্ট্রিবিউশন বোর্ডে প্রটেকটিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
৩। প্রতিটি সাব-সার্কিটে প্রটেকটিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
৪। প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি (রেফ্রিজারেটর, হিটার, মোটর, ওভেন ইত্যাদি)-তে ব্যবহার করা হয়।
৫। তাছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার প্রতিটি ধাপে এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
বৈদ্যুতিক বর্তনীতে যে কোনো ত্রুটির কারণে পূর্ব নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হলে বর্তনীর তারের নরম ইনসুলেশন এবং যন্ত্রপাতি গরম হয়ে ক্ষতি হতে পারে, এমনকি অকেজো বা পুড়ে যেতে পারে। তাই বর্তনীর তার যন্ত্রপাতি এবং ব্যবহারকারীকে অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা হতে রক্ষা করার জন্য বর্তনীতে ফিউজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ফিউজ এক প্রকার বৈদ্যুতিক প্রটেকটিভ ডিভাইস যাহা নরম ধাতুর তার দিয়ে গঠিত। যার ভিতর দিয়ে নির্দিষ্ট উচ্চতম পরিমাণের চেয়ে বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হলে তাপে নিজে পুড়ে গিয়ে বর্তনীকে সাপ্লাই থেকে বিচ্ছিন্ন করে; ফলে বর্তনী ও বর্তনীতে সংযুক্ত বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট হবার হাত থেকে রক্ষা পায়। এটি সার্কিটে লোডের সাথে সিরিজে সংযুক্ত থাকে। ফিউজ তার হিসেবে সাধারণত সীসা ও টিন এর মিশ্রণ বা রূপা ব্যবহার করা হয়। ফিউজের প্রধান অংশ তিনটি। যথা-
১। ফিউজ তার;
২। ফিউজ তারের বাহক;
৩। ফিউজ বেস বা তলদেশ ।
ফিউজ হিসেবে ব্যবহৃত মূল উপাদানকে ফিউজ তার বলে। ফিউজ তার পরিবাহী পদার্থের এবং এটি সংকর ধাতুর তৈরি। রূপার তৈরি ফিউজ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় এবং ভালো। বাজারে বিভিন্ন মানের প্রয়োজনীয় ফিউজ পাওয়া যায়।
যে কোনো বৈদ্যুতিক বর্তনীতে শর্ট সার্কিট, আর্থ ফন্ট লিকেজ বা ওভারলোডের কারণে পূর্ব নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহিত হয়। ফলে বর্তনীর তারের নরম ইনসুলেশন এবং যন্ত্রপাতি গরম হয়ে ক্ষতি হতে পারে, এমনকি অকেজো বা পুড়ে যেতে পারে। তাই বর্তনীর তার যন্ত্রপাতি এবং ব্যবহারকারীকে অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা হতে রক্ষা করার জন্য বর্তনীতে ফিউজ ব্যবহারের প্রয়োজন। বৈদ্যুতিক সার্কিটের সাথে সংযুক্ত লোডগুলোকে অতিরিক্ত কারেন্ট জনিত কিংবা ওভার লোড জনিত কারণে পুড়ে যাওয়ার হাত হতে রক্ষা করা এবং বিপদমুক্তভাবে মেরামত কাজ করতে ফিউজ এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া প্রয়োজনবোধে বর্তনীকে সাপ্লাই লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ফিউজ ব্যবহার করা হয়।
ফিউজ খুব সাধারণ ধরনের রক্ষণ যন্ত্র যা, সার্কিটে যুক্ত অবস্থায় অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহের হাত থেকে রক্ষা করে। এর গঠন, কাজের ধরন অনুসারে বিভিন্ন রকমের ফিউজ হয়। গঠন অনুযায়ী ফিউজ তিন ধরনের।
১. রি-ওয়্যারয়েবল ফিউজ ।
২. কার্টিজ ফিউজ বা স্ক্রু-প্লাগ ফিউজ ।
৩. এইচআরসি (High Rupturing Cartridge) ফিউজ ।
• ভোল্টেজ অনুসারে ফিউজ দুই ধরনের ।
(ক) লো ভোল্টেজ ফিউজ
(খ) হাই ভোল্টেজ ফিউজ ।
লো ভোল্টেজ ফিউজগুলোর মধ্যে রি-ওয়্যারয়েবল ফিউজ আর হাই ভোল্টেজ ফিউজগুলোর মধ্যে লিকুইড ফিউজ, মেটাল ক্লোড ফিউজ, এইচআরসি ফিউজ, কার্ট্রিজ ফিউজ ইত্যাদি। এ ছাড়া ফিউজকে আরও কতকগুলো ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১। প্লাগ ফিউজ
২। টাইম ডিলে ফিউজ
৩। কার্বন টেট্রা ক্লোরাইড ফিউজ
৪ । ওপেন ফিউজ
৫। বাই- মেটাল ফিউজ ইত্যাদি।
রি- ওয়্যারেবল ফিউজ এর গঠন : যে ফিউজ এর ফিউজ তার পুড়ে ফিরে গলে যাওয়ার সহজে পরিবর্তন করা বা বদলানো বার তাকে রিওয়্যাররেবল ফিউজ বলে।
ফিউজ এ ব্যবহারিত অংশগুলো নিম্নরূপ :
(ক) ফিউজ সফেট বা বেস
(খ) ফিউজ ওয়্যার হোল্ডার বা ব্রিজ
(গ) স্প্রিংযুক্ত সংযোগকারী টার্মিনাল এবং টার্নিমাল স্ক্রু
(গ) ফিউজ তার লাগা কন্ট্যাক্ট টার্মিনাল স্ক্রুসহ কন্টাক্ট টার্মিনাল
(ঙ) ফিউজ তার।
এটি মূলত একটি চীনামাটির অধর, যা ফিউজ সকেট বা ফিটজ বেস নামে পরিচিত। এটি চিত্র ৩.৫ তে দেখানো হয়েছে। ফিউজ সকেটে স্প্রিযুক্ত সংযোগকারী দুইটি টার্মিনাল এবং দুইটি টার্মিনাল থাকে, যার সাহায্যে বৈদ্যুতিক বর্তনীকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাইলের সাথে সংযোগ করা হয়। রিচাররেবল ফিউজের তার পুড়ে যাওয়ার সময় যে অগ্নিস্ফুলিন দেখা দেয় এর প্রতিক্রিয়া হতে রক্ষার জন্যে যেসের তলদেশে এসকেস্টাস এর প্যাড ব্যবহার করা হয়।
ব্রিক ফিউজ ব্রিজ সাধারণত চীনামাটির তৈরি হয়। একে ফিউজ ওয়্যার হোল্ডারও বলা হয়। ফিউজ ব্রিজ বা ফিউজ ওয়্যার হোল্ডারে দুইটি কন্ট্যাক্ট থাকে, যা ফিউজ সকেটে নির্দিষ্ট বাজে বসানো যায়। ফিউজ তার ফিউজ ব্রিজ এ দুই কন্ট্যাক্ট টার্মিনালে ড্র এর সাহায্যে সংযুক্ত থাকে যা চিত্রে দেখানো হয়েছে।
কার্যপ্রণালি: ফিউজ ওয়্যার হোন্ডারে বা ফিউলের ব্রিজে দুইটি কন্ট্যান্ট থাকে, যা ফিউজ সার্কিটে নির্দিষ্ট থাকে। ফিউজ তার ফিউজ ব্রিজের দুই কন্ট্যাক্ট টার্মিনাল ফ্লু-এর সাহায্যে সংযুক্ত থাকে, যা ফিউজ বেসের দুইটি কন্ট্যাক্ট সংযোগ করে দেয়। যদি ফিউজ তার গলে যায়, তবে মেইন সুইচ বা সার্কিট ব্রেকার বন্ধ করে, ফিউজের ফ্রিজ খুলে নির্দিষ্ট রেটিং এর নতুন ফিউজ তার লাগাতে হয়।
এ ধরনের ফিউজের সাথে সভা এবং বার বার ফিউজ তার পাল্টিরে ব্যবহার করা যায়। তাই বাড়ির ওয়্যারিং এর ক্ষেত্রে এ ধরনের ফিউজ প্রায়ই ব্যবহার করা হয়।
কার্টিজ ফিউজ বা ফু প্লাগ ফিউজ এ ফিউজ দেখতে বন্দুকের টোটা বা কার্টিজের মত, তাই একে কার্টিজ ফিউল বলে। কার্টিজ একটা চীনামাটি বা গ্লাসের তৈরি নল, যার উভয়দিকে ধাতুর টুপি দিয়ে বন্ধ থাকে। নলের ভিতরে দুই ধাতব টুপির মাঝে ফিউজ তার আটকানো থাকে। ফিউজ পুড়ে যে গ্যাস তৈরি হয়, তা আটকানোর জন্য সিলিকা দিয়ে নল ভর্তি থাকে। ২, ৪, ৬, ১০, ১৫, ২০, ২৫, ৩৫ অ্যাম্পিয়ারের কার্টিজ ফিউজ সচরাচর ব্যবহৃত হয়। ফিউজ পুড়ে গেলে কাঁচের নদের মধ্যে ধোঁয়ার দাগ দেখা যায়। চিত্র ৩.৭ তে দেখানো হয়েছে। ফিউজের বিভিন্ন অংশ হলো-
১। ফিউজ ক্যাপ বা ফিউজ কার্টিজ হোল্ডার,
২। ফিউজ কার্টিজ,
৩। ফিটিং স্ক্রু বা কন্ট্যাক্ট ফু
৪। প্রেটেকটিভ প্লাস্টিক বা সিরামিক রিং,
৫। ফিউজ বেস বা ফিউজ সকেট।
কার্যপ্রণালি: কাট্রিজ ফিউজের জন্য ফিউজ কার্টিজ ২, ৪, ৬, ১০, ১৬, ২০, ২৫, ৩০, ৫০, ৬৩ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট মানের পাওয়া যায়। উচ্চ মানের ফিউজ কার্টিজ যেন নিম্ন মানের কন্ট্যাক্ট তে লাগানো না যায়, সে জন্য ফিউজ ফার্টিজের কুট কন্ট্যাক্টগুলো বিভিন্ন ব্যাসের হরে থাকে। কম কারেন্টের জন্য ফুট কন্ট্যাক্ট ছোট ব্যাসের হয়। যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন মানের কার্টিজের এবং ফিটিং এর মান সমান না হলে একে অপরের সাথে ব্যবহার করা যাবে না। যেমন-২৫ অ্যাম্পিয়ার মানের ফিটিং মুতে ৩৫ অ্যাম্পিয়ার ফিউজ কার্টিজ ব্যবহার করা যাবে।
উপরোক্ত ফিউজ কার্টিজের ভিতরের একটা নকশা দেখানো হয়েছে। এতে নিচের এবং উপরের কন্ট্যানীসহ সিরামিকের মূল অংশটা দেখানো হয়েছে। কন্ট্যাক্ট দুইটি বালি ভর্তি একটি বলের মধ্যে একটি ফিউজ তারের সাহায্যে সংযোগ করা হয়েছে। প্রত্যেক কার্টিজে একটি নির্দেশক থাকে, যা ফিউজ তার পুড়ে গেলে কার্টিজ হতে নিক্ষিপ্ত হয় এবং পুড়ে যাওয়া ফিউজ বোঝা যায় ।
১। উপরের কন্ট্যাক্ট,
২। নির্দেশক,
৩। ফিউজ তার,
৪। বালির গুড়া,
৫। সিরামিকের মূল অংশ ও
৬। নিচের কন্ট্যাক্ট।
এ ধরনের ফিউজ কম কারেন্ট নেয় এমন একটি ইলেকট্রিকাল এবং ইলেকট্রনিক সরঞ্জামে ব্যবহার করা হয়। এটি কাঁচের তৈরি, যার দুইপ্রান্ত দুইটি কন্ট্যাক্ট এর মাধ্যমে ফিউজ ওয়্যার সংযুক্ত থাকে। এইচ. আর. সি. ফিউজ এটা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফিউজ। অতিরিক্ত লোডের বর্তনীকে রক্ষা করার জন্য এ ধরনের ফিউজ ব্যবহার করা হয়। শর্ট সার্কিট অবস্থায় এটা পাশের ঘ্যাপাতির কোন ক্ষতি সাধন না করে অতি সহজেই বর্তনীকে বিপদ যুক্ত করতে পারে।
গঠন: এ ফিউজের গঠন অনেকটা কার্টিজ ফিউজের ন্যায়। ফিউজের কার্টিজ নলটি উচ্চ মানের সিরামিক অথবা কাঁচের তৈরি । ফিউজ তার খাঁটি রূপার তৈরি। নলটির দুই প্রাপ্ত পিতল বা ভাষার টুপি উভয় কন্ট্যাক্ট টার্মিনালের সাথে আটকানো থাকে।
কার্টিজ ফিউজের অংশগুলো হলো- ১। হাতল ২। ফিউজ কার্টিজ ৩। ফিউজ সকেট ৪। চিনামাটির নল ৫। কন্ট্যাক্ট প্রাপ্ত ৬। ফিউজ তার ইত্যাদি।
কার্যপ্রণালি: সিরামিক বা কাঁচের নদের মধ্যে ফিউজ তারের চতুর্দিকে কোয়ার্টজ পাউডার দিয়ে ভর্তি থাকে। ফিউজ তার গলার সময় ফিউজের কন্ডাক্টর ভিতরে যে বৈদ্যুতিক আর্ক উৎপন্ন হয়, তা এই পাউডার শোষণ করে। ফিউজ তার গলার সময় এক প্রকার গ্যাস উৎপন্ন হয়, তা কোয়ার্টজ পাউডারের সঙ্গে একত্র হয়ে ফিউজের ভিতরে যথেষ্ট চাপ এবং তড়িৎ প্রবাহের পথে খুব উচ্চরোধ সৃষ্টি করে। ফলে আর্ক দ্রুত নির্বাপিত হয়। বিভিন্ন ধরনের ফিউজ বাজারে পাওয়া যায়। প্রত্যেক ফিউজের গায়ে বা কন্ট্যাক্ট টার্মিনালে তারের কারেন্ট বহন ক্ষমতা ও ভোল্টেজ যেত লেখা থাকে।
বৈদ্যুতিক সার্কিটে শর্ট সার্কিট বা অন্য কোন কারণে খুব বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হলে লাইনের তার ও যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের নিরাপত্তার জন্য সার্কিটে সহজলভ্য রক্ষণ যন্ত্র হিসেবে ফিউজ ব্যবহার করা হয়। ফিউজ সর্বদা ফেজ তারে লাগাতে হয়। এটি নিউট্রাল তারে লাগালে ফিউজ পুড়ে যাওয়ার পরও সুইচ এবং লোড পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে যা রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যাঘাত ঘটবে এবং বৈদ্যুতিক শক পাবে। আর ফিউজ পুড়ে যাওয়া অবস্থায় লোড চলবে না এবং সুইচ অন করে কেহ যদি মনে করে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই মনে করে কাজ করতে যায় তাহলে বৈদ্যুতিক শক পাবে। লোড ও সার্কিটের নিরাপত্তার জন্য এবং নিরাপদভাবে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ফিউজ শুধুমাত্র ফেজ তারেই লাগানো হয়।
যে সমস্ত কারণে ফিউজ পুড়ে যায় সেগুলো হলো-
১। শর্ট সার্কিট জনিত কারণে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহ হলে।
২। অতিরিক্ত লোড সংযোগ করলে।
৩। সার্জ ভোল্টেজের কারণে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহ হলে।
৪। আর্থ ফল্ট বা আর্থ লিকেজের কারণে অতি কারেন্ট প্রবাহ হলে।
উল্লিখিত কারণে ফিউজের মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহে যে তাপ হয় তাতেই ফিউজ তার গলে যায় বা পুড়ে যায়।
ফিউজ তার হিসেবে নমনীয় নিম্ন গলনাঙ্কের সংকর ধাতুর তার ব্যবহার করা হয়। রূপার তৈরি ফিউজ তার উত্তম। টিন এবং সীসার (৬০% এবং ৪০%) মিশ্রণে ফিউজ তার তৈরি করা হয়। এ তার ফিউজ ব্রিজের কন্ট্যাক্ট টার্মিনালের স্ক্রু এর সাথে লাগানো থাকে। ফিউজ ব্রিজটি ফিউজ সকেটে স্থাপন করলে ফিউজ সকেটের টার্মিনাল দুইটি ব্রিজ টার্মিনাল ও ফিউজ তারের মাধ্যমে কন্ট্যাক্ট পায়। এ ভাবে ফিউজ সকেটের এক টার্মিনাল হতে অপর টার্মিনালের দিকে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
বৈদ্যুতিক সার্কিটে ফিউজ ব্যবহারের কারণ আমরা আগেই জেনেছি। আর এ ফিউজ বা ফিউজ তার যদি আমরা নিউট্রাল তারেও লাগাই তাহলেও সার্কিটে ফিউজ ব্যবহারের আসল উদ্দেশ্য নিশ্চিত হবে; কিন্তু যে সমস্যাগুলো দেখা দিবে সেগুলো নিম্নরূপ:
(ক) যদি ফিউজ নিউট্রালে থাকে তবে ফিউজ পুড়ে গেলেও লোড পর্যন্ত কারেন্ট থাকবে, যা সার্কিটের যে কোন ধরনের মেরামতে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।
(খ) ফিউজ তার পুড়ে গেলে কেহ যদি মনে করে সার্কিটে কারেন্ট নেই তাহলে সে বৈদ্যুতিক শক পাবে ।
(গ) ফিউজ খুলে সার্কিটের বাকি অংশ মেরামত নিরাপদ হবে না। এ সকল অসুবিধা দুর করতে ফিউজ লাইন বা ফেজ এ লাগানো হয়।
বিভিন্ন প্রকার ফিউজের ব্যবহার
নিচে বিভিন্ন ধরনের ফিউজের ব্যবহার উল্লেখ করা করা হলো।
১। বাসা-বাড়িতে বিভিন্ন সাব-সার্কিটে ফিউজ ব্যবহার করা হয়। ২। লেদ মেশিন, ড্রিল মেশিন ইত্যাদিতে ব্যবহৃত মোটরের জন্য একই রকম ফিউজ ব্যবহার করা হয়।
৩। ইলেকট্রনিক্স সরজ্ঞাম (রেডিও, টিভি, ইউপিএস) এ সহজে পরিবর্তন করা যায় এরূপ ফিউজ হিসেবে ব্লু-
ইন টাইপ ফিউজ ব্যবহার করা হয়।
৪। সার্কিটের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণে ফিউজ ব্যবহৃত হয়।
৫। সাবস্টেশনে এইচ আর সি ফিউজ ব্যবহৃত হয়।
৬। ফিউজের সাইজ অনুযায়ী ৫ অ্যাম্পিয়ার থেকে ১০ অ্যাম্পিয়ার রি-ওয়্যারয়েবল বা প্লাগ ফিউজ ব্যবহার করা হয়। অধিকাংশ যন্ত্রপাতিতে কাট্রিজ ফিউজ ব্যবহার করা হয়। যেখানে আগুন লাগার সম্ভবনা থাকে সেখানে এইচ আর সি ফিউজ ব্যবহার করা হয়। এ ফিউজ ব্যবহারে দুইটি অসুবিধা দেখা দেয়।
(ক) হাই ভোল্টেজে অধিক পাওয়ার সরবরাহে ফিউজ ব্যবহার করা যায় না এবং
(খ) ফিউজ পুড়ে গেলে পুনঃস্থাপন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে হয়, যা সবাই নিরাপদ ভাবে করতে পারে না।
যে পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহের ফলে ফিউজ ইলিমেন্ট পুড়ে যায় বা গলে যায়, তাকে উক্ত ফিউজ এর ফিউজিং কারেন্ট
বলে। কোন ফিউজ এর ফিউজিং কারেন্ট এবং রেটেড কারেন্ট এর অনুপাতকে উক্ত ফিউজ এর ফিউজিং ফ্যাক্টর বলে। যেমন কোন ফিউজ এর রেটেড কারেন্ট IR অ্যাম্পিয়ার এবং ফিউজিং কারেন্ট IF অ্যাম্পিয়ার হলে উক্ত ফিউজ ফিউজ এলিমেন্টের ফিউজিং কারেন্ট
এর ফিউজিং ফ্যাক্টর, FF = ফিউজ এলিমেন্টের ফিউজিং কারেন্ট/ফিউজ এলিমেন্টের রেটেড কারেন্ট = IFIR।
ফিউজিং ফ্যাক্টর যেহেতু একই জাতীয় রাশির অনুপাত তাই এর কোন একক নেই। লাইটিং লোডের ক্ষেত্রে ফিউজিং কারেন্ট, লোড কারেন্টের ১.৫ গুণ। অর্থাৎ ফিউজিং ফ্যাক্টর ১.৫। অপরদিকে মোটরের ক্ষেত্রে ফিউজিং কারেন্ট, লোড কারেন্টের ২.৫ গুণ। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ফিউজিং ফ্যাক্টর ২.৫। সাধারণত গ্রহণযোগ্য ফিউজিং ফ্যাক্টর নরমাল কারেন্টের দ্বিগুণ হিসেবে ধরা হয়। ফিউজিং ফ্যাক্টরের মান সর্বদা একের বেশি হয়। কারণ ফিউজিং কারেন্ট সর্বদা রেটেড কারেন্টের চেয়ে বেশি হয়।
ফিউজ তারের সাইজ ও কারেন্ট বহন ক্ষমতার সম্পর্ক ফিউজের সাইজ বলতে ফিউজ তারেরই সাইজ বোঝায়। ফিউজ তারের সাইজ ও কারেন্ট বহন ক্ষমতা লোড প্রবাহিত নরমাল কারেন্টের ২৫% বেশি হতে হবে।
ফিউজের রেটেড কারেন্ট ও ফিউজিং কারেন্ট নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে।
(ক) ফিউজ তারের কার্যকরী অংশের দৈর্ঘ্য
(খ) ফিউজ তারের দুই প্রান্তে ব্যবহৃত টার্মিনালের সাইজ
(গ) ফিউজ তারের অবস্থা, কারণ রজ্জু আকৃতির ফিউজ সলিড এলিমেন্ট এর চেয়ে বেশি কারেন্ট
বহন করে।
(ঘ) ফিউজ তারের অবস্থান ও ব্যবহারিক ক্ষেত্র।
সার্কিট ব্রেকার বৈদ্যুতিক সিস্টেমে ব্যবহৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণ যন্ত্র। ওভার লোড ও শর্ট সার্কিট জনিত ঘটনায় এমসিবি বহুল ব্যবহৃত একটি রক্ষণ যন্ত্র। এমসিবি বাসা-বাড়ি, দোকান ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত এক ধরনের সার্কিট ব্রেকার।
সার্কিট ব্রেকার এমন একটি যন্ত্র, যা আপদকালীন সময়ে বা অস্বাভাবিক অবস্থায় সার্কিটকে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার হাত হতে রক্ষা করে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্কিটকে খোলে (Open) ও বন্ধ (Close) করে। এমসিবি মূলত একটি সার্কিট ব্রেকার । যা আকারে খুবই ছোট। এর পুরো নাম হচ্ছে মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার। এ সার্কিট ব্রেকার অল্প কারেন্টে কাজ (Operate) করতে পারে।
এমসিবি (MCB) এর পূর্ণ অর্থ মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার (Miniature Circuit Breaker). শর্ট সার্কিট ও ওভার লোড জনিত দুর্ঘটনা থেকে সার্কিটকে রক্ষা করতে কম কারেন্ট প্রবাহের ক্ষেত্রে ছোট আকারের যে সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা যায় তা এমসিবি। সার্কিট ব্রেকার একটি স্বয়ংক্রিয় রক্ষণ যন্ত্র যা সার্কিটের স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক অবস্থায় সার্কিটকে অফ বা অন করতে পারে।
মিনিয়েচার শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ছোট আকৃতির। যে সার্কিট ব্রেকার আকারের দিক থেকে ছোট এবং স্বল্প কারেন্টে পরিচালিত হয়, তাকে এমসিবি বলে। সুতরাং মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার বলতে কম কারেন্ট বহন ক্ষমতা বিশিষ্ট সার্কিট ব্রেকারকে বোঝায়। বাড়িঘরে সাব সার্কিটের লোড, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, মোটর এ এমসিবি ব্যবহৃত হয় । বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে সার্কিটে অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহ বন্ধ করে।
সাধারণত কম কারেন্ট বহন ক্ষমতা বিশিষ্ট সার্কিট বা বৈদ্যুতিক লোডকে দুর্ঘটনা জনিত বা ওভারলোডের কারণে মাত্রাতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহের হাত থেকে রক্ষার জন্য এমসিবি ব্যবহার করা হয়।
বাড়ি ঘরে, বৈদ্যুতিক এ্যাপ্লায়েন্সে এবং বৈদ্যুতিক মোটরে এটি ব্যবহৃত হয়। সার্কিট ব্রেকার এমন একটি রক্ষণ যন্ত্র, যা সার্কিটের অস্বাভাবিক অবস্থায় (শর্ট সার্কিট এর কারণে বা অন্য যে কোন কারণে সার্কিটে পূর্ব নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হলে) ব্যবহারকারীর বা সার্কিটের কোন ক্ষতি ব্যতিরেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্কিটকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, যা সুইচ দ্বারা সম্পূর্ণ হয় না। অথচ সার্কিট ব্রেকার, এমসিবি দিয়ে ফিউজ এবং সুইচ উভয়ের কাজ পাওয়া যায়। সুইচ হিসেবেও এমসিবি ব্যবহার করা যায়। পরিমিত কারেন্ট প্রবাহে এটি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সক্রিয় থাকে। ১০০% অতিরিক্ত কারেন্ট নিয়ে মোটর চালু করার পর্যাপ্ত সময়ের জন্য এটি সক্রিয় থাকে। ফিউজ ব্যবহার করলে এবং তা পুড়ে গেলে পুনরায় ফিউজ তার না লাগানো পর্যন্ত সার্কিট অফ থাকে। কিন্তু সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করলে সার্কিটের ফন্ট দুর করে অন করে দিলেই পুনরায় সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহিত হবে। উপরোক্ত সুবিধার কারণে সার্কিট ব্রেকার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
এমসিবি ব্যবহারের সুবিধাগুলো নিচে আলোচনা করা হলো-
১। এটি সাধারণ সুইচ ও ফিউজের ন্যায়ও ব্যবহার করা যায়।
২। শর্ট সার্কিট, ওভারলোড ও আর্থ ফন্টের কারণে অতিরিক্ত কারেন্ট থেকে বর্তনীকে রক্ষা করতে এটি সর্বোত্তম ব্যবস্থা।
৩। ওভারলোডের কারণে এটি তাৎক্ষণিক ভাবে ট্রিপ করে না। ১০০% অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহে প্রায় ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত এটি সক্রিয় থাকতে পারে এবং পূর্ণ আরপিএম লাভ করা পর্যন্ত অতিরিক্ত প্রারম্ভিক কারেন্ট নিয়ে মোটর চালু করার পর্যাপ্ত সময়ের জন্য এটা চালু থাকে ।
৪। ফিউজ ব্যবহার করলে বা পুড়ে গেলে পুনরায় ফিউজ তার না লাগানো পর্যন্ত সার্কিট অফ থাকে, কিন্তু সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করলে সার্কিটের ফন্ট দুর করে অন করে দিলেই পুনরায় সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহিত হবে।
৫। আকারে ছোট বলে এটি অল্প জায়গায় স্থাপন করা যায়।
এমসিবি ব্যবহারের অসুবিধাগুলো নিচে আলোচনা করা হলো-
১। তুলনামূলক ভাবে বেশি ব্যয় সাপেক্ষ।
২। একবার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেলে জটিল গঠনের কারণে পুনরায় মেরামত করা সম্ভব হয় না।
৩। অধিক কারেন্ট বহনের ক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করা যায় না।
৪। নিম্ন ভোল্টেজ চাপের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও উচ্চ ভোল্টেজ চাপের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যায় না।
বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জামের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে সহজ করে তুলেছে। এ ধরনের সরঞ্জাম ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের আওতাভূক্ত। ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্থাপনায় ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যয় ও নিরাপত্তা নির্ভর করে সার্কিটে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের সঠিক স্থাপন ও সংযোগের উপর। ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট স্থাপনের কাজ শেষ হলে সার্কিটে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের পূর্বে টেস্ট করা জরুরি। এ অধ্যায়ে সার্কিটের বিভিন্ন টেস্ট; যেমন পোলারিটি টেস্ট, কন্টিনিউয়িটি টেস্ট, পরিবাহীর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট, আর্থ রেজিস্ট্যান্স টেস্ট ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
এ অধ্যায় শেষে আমরা-
• কাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারব;
• AVO মিটার ব্যবহার করে সার্কিটের কন্টিনিউরিটি টেস্ট করতে পারব
• আর্থ টেস্টার ব্যবহার করে সার্কিটের আর্দ্র রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করতে পারব,
• মেগার ব্যবহার করে সার্কিটের ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট করতে পারব;
• টুলস ও ইকুইপমেন্ট সংরক্ষণ করতে পারব।
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের বিভিন্ন টেস্ট; যেমন পোলারিটি টেস্ট, কন্টিনিউরিটি টেস্ট, পরিবাহীর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট, আর্থ রেজিস্ট্যান্স টেস্ট ইত্যাদি সফলভাবে সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানা প্রয়োজন ।
অফিস, বাসা-বাড়ি, কল-কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দোকান ইত্যাদি যে কোন স্থাপনা বৈদ্যুতিকরণের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বা সংযোগের পূর্বে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট টেস্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন কাজের সঠিকতা যাচাই ও নিরাপত্তার জন্য এ টেস্ট করা হয়। এ অধ্যায়ে সার্কিটের পোলারিটি টেস্ট, কন্টিনিউয়িটি টেস্ট, পরিবাহীর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট, আর্থ রেজিস্ট্যান্স টেস্ট সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
যে কোন স্থাপনা বৈদ্যুতিকরণের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বা সংযোগের পূর্বে ওয়্যারিং এর যে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, তাকে ওয়্যারিং টেস্টিং বলে। ওয়্যারিং ত্রুটিবিহীন এবং নিরাপদ হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এ পরীক্ষা বা পরীক্ষাসমূহ করা হয়। কোন ওয়্যারিং কাজ সঠিকভাবে নিয়ম মোতাবেক নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ত্রুটিবিহীনভাবে সম্পন্ন হয়েছে এই মর্মে নিশ্চিত হতে হলে তা অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সাধারণত কোন ওয়্যারিং কাজ সম্পন্ন করার পর একে দুটি ধাপে পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হয়।
সকল কিছু সরেজমিনে দেখে বা পরিদর্শন করে প্রথম ধাপ সম্পন্ন করা হয়, যা সাধারণ পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে করা হয়। টেস্ট বাতি, যেগার, নিয়ন টেস্টার দিয়ে ওয়্যারিং টেস্ট করা হয়। টেস্ট বাতি দিয়ে করতে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হয়।
ওয়্যারিং কাজ চলার সময় যে টেস্টগুলো করা হয় সেগুলো হলো-
১। পরিবাহীর কন্টিনিউয়িটি টেস্ট;
২। সুইচের পোলারিটি টেস্ট;
৩। পরিবাহীর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট।
ওয়্যারিং কাজ শেষ হলে সার্কিটে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের পূর্বে যে টেস্টগুলো করা হয় সেগুলো-
১। আর্থ টেস্ট:
২। আর্থের সাথে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট (কন্ডাক্টর টু আর্থ);
৩। সুইচের পোলারিটি টেস্ট।
বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর কাজ চলার সময় বা শেষ হলে, ওয়্যারিং ত্রুটিবিহীন এবং নিরাপদ হয়েছে এ বিষয়ে
নিশ্চিত হওয়ার জন্য সার্কিট টেস্ট করা হয়। ওয়্যারিং টেস্ট না করে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিলে কোন কোন ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি পুড়ে যেতে পারে। ওয়্যারিং এর কোথাও শর্ট থাকলে এরূপ ঘটতে পারে। সুতরাং নিশ্চিত করে বলা
যায়, বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং শেষে এটি টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যয় ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করতে হয়। যেমন- সার্কিটের পোলারিটি টেস্ট, কন্টিনিউয়িটি টেস্ট, পরিবাহীর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট, আর্থ রেজিস্ট্যান্স টেস্ট। নিচে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট নিয়ে আলোচনা করা হলো।
বৈদ্যুতিক বিধি মোতাবেক ওয়্যারিং এ ব্যবহৃত সুইচ ও ফিউজসমূহ শুধু সরবরাহ লাইনের ফেজ তারের সাথে সংযোগ দিতে হবে। কোন অবস্থাতেই সুইচ ও ফিউজসমূহ নিউট্রাল তারের সাথে সংযুক্ত করা যাবে না। সাধারণত দুইভাবে পোলারিটি টেস্ট করা যায়, যেমন- ক) নিয়ন টেস্টারের মাধ্যমে খ) টেস্ট ল্যাম্পের মাধ্যমে। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বিহীন বা সরবরাহ লাইনে সংযোগ দেওয়া হয় নাই এমন ওয়্যারিং এ ব্যবহৃত সুইচসমূহের পোলারিটি মেগারের সাহায্যে টেস্ট করা যায়।
ক) নিয়ন টেস্টারের মাধ্যমে পরীক্ষা: এ পদ্ধতির মাধ্যমে সবচেয়ে সহজে এবং দ্রুত সুইচের পোলারিটি টেস্ট করা যায়। এ পদ্ধতিতে সুইচের আওতায় ত্রুটিমুক্ত লোড সংযুক্ত থাকলে সুইচটিকে অফ করে সুইচের যে প্রান্তে বা পয়েন্টে সরবরাহ লাইনের সংযোগ আছে সেখানে নিয়ন টেস্টারের অগ্রভাগ স্পর্শ করিয়ে টেস্টারের অপর প্রান্তের নির্দিষ্ট স্থানে বৃদ্ধাঙ্গুলি স্পর্শ (আর্থ) করলে যদি টেস্টারের নিয়ন ল্যাম্পটি জ্বলে তবে বুঝতে হবে সুইচের পোলারিটি সঠিক আছে। তবে এ ক্ষেত্রে ত্রুটি থাকার সম্ভবনা থাকে, তাই পরীক্ষা শেষে লোডসমূহ খুলে রেখে পুনরায় পরীক্ষা করলে যদি দেখা যায় এবারও টেস্টার জ্বলছে তবেই নিশ্চিত হওয়া যাবে যে সুইচের পোলারিটি ঠিক আছে। কখনও ফিউজ বা সুইচ নিউট্রালে সংযোগ করা চলবে না। ফিউজ বা সুইচ নিউট্রালে সংযোগ করলে প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হবে কিন্তু লাইনের মেরামতের সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
খ) টেস্ট ল্যাম্পের মাধ্যমে পরীক্ষা: টেস্ট ল্যাম্পের একপ্রান্ত আর্থের সাথে এবং অন্য প্রান্তে সুইচ অন করে সুইচের অন্য প্রান্তে স্পর্শ করতে হবে। যদি টেস্ট ল্যাম্প জ্বলে উঠে, তবে বুঝতে হবে পোলারিটি ঠিক আছে। অর্থাৎ সুইচ লাইভ লাইন বা ফেজ তারে সংযোগ আছে। আর বাতি না জ্বললে বুঝতে হবে পোলারিটি ঠিক নাই অর্থাৎ সুইচ নিউট্রালে লাগানো আছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে Continuity tester বা Avometer অথবা ইনসুলেশন টেস্টিং মেগার ব্যবহার করা হয়। সরবরাহ থাকলে নিয়ন টেস্টারের মাধ্যমেও ফেজ তার শনাক্ত করা যায়।
যে কোন ওয়্যারিং কাজ শেষ করার পর সরবরাহ প্রদানের পূর্বে উক্ত ওয়্যারিং এর কন্টিনিউয়িটি বা নিরবচ্ছিন্নতা সঠিক আছে কিনা তা যে টেস্টের মাধ্যমে জানা যায়, তাকে ওয়্যারিং এর কন্টিনিউরিটি টেস্ট বলে। ওয়্যারিং এর নিরবচ্ছিন্নতা ঠিক না থাকলে ওয়্যারিং এর পয়েন্টসমূহে সংযুক্ত লোডগুলি কাজ করবে না। তাই ওয়্যারিং কাজ শেষ করার পর এর কন্টিনিউরিটি বা নিরবচিত্রতা পরীক্ষা করা আবশ্যক। কন্টিনিউরিটি পরীক্ষার মাধ্যমে ওয়্যারিং এ ব্যবহৃত পরিবাহী কোথাও কোন ছেঁড়া, কাটা, ভাজা কিংবা কোন জাংশন বক্সে সংযোগ নেই এমন অবস্থাসমূহ জানা যায় ।
আর্থ কন্টিনিউরিটি পরীক্ষা করার পদ্ধতি: ওয়্যারিং এর আওতায় যে সকল ধাতব বডির সরঞ্জাম থাকে সেগুলোর ধাতব অংশকে আর্থের সাথে সংযোগ করে দিতে হয়। দুর্ঘটনার হাত হতে বৈদ্যুতিক ব্যাপাতি এবং মানুষকে রক্ষা করার জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতু নির্মিত বাহিরের অংশের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হবে। যাতে কারেন্ট পরিবাহী তারের ভিতর দিয়ে নিরাপদভাবে মাটিতে চলে যেতে পারে ঐ ব্যবস্থাকে আর্থিং বলে। আর্থ তারের নিরবচ্ছিন্নতা বা কন্টিনিউরিটি ঠিক না থাকলে ব্যবহারকারী যে কোন সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। তাই আর্থ তারের নিরবচ্ছিন্নতা বা কন্টিনিউয়িটি ঠিক আছে কিনা তা জানতে অর্থ কন্টিনিউরিটি পরীক্ষা করা হয়।
এ পরীক্ষায় প্রথমে মেইনসুইচ অফ করে ফিউজ খুলে নিতে হবে। সার্কিটের অন্যান্য ফিউজগুলো যথারীতি লাগানো থাকবে। বাতি, পাখাসহ সকল লোড / ডিভাইস লাগিয়ে রাখতে হবে। সকল সুইচ অফ রেখে মেইন সুইচ থেকে বেরিয়ে যাওয়া দু'টি কন্ডাকটরের সাথে মেগারের L ও B টার্মিনাল সংযোগ দিতে হবে এবং এক একটি করে সুইচ অন করে মেগারের কাঁটা ঘুরালে যদি ফেগারের কাঁটা শূন্য ডিফ্লেকশন দেয়, তবে বুঝতে হবে কন্টিনিউরিটি ঠিক আছে। যদি ফাটা শূন্য (০) থেকে দূরে থকে, তাহলে বুঝতে হবে কন্টিনিউরিটি ঠিক নেই। এভাবে একটি একটি করে সুইচ অন করে কভিনিউটি টেস্ট করতে হবে।
সেপারের পরিবর্তে মাল্টিমিটার বা কন্টিনিউরিটি টেস্টার/আর্থ টেস্টার দ্বারা এ টেস্ট করা যায় ।
ওয়্যারিং টেস্টের জন্য বহুল ব্যবহৃত টেস্ট ল্যাম্প ব্যবহার করা যেতে পারে। যে কোনো ইলেকট্রিশিয়ানের জন্য টেস্ট বাতি একটি অতি প্রয়োজনীয় ও সহজলভ্য সরঞ্জাম। কোন হোল্ডারে দুইগাছা ইনসুলেট করা তার চিত্র অনুযায়ী সংযোগ করে নিলেই টেস্ট বাতি প্রস্তুত হয়ে যায়। যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। টেস্ট ৰাতি দুই ধরনের হয়ে থাকে।
(ক) সিলেন ফেজ টেস্ট বাভি ও (খ) থ্রি-ফেজ টেস্ট ৰাতি ।
এ অধ্যায়ে শুধু সিঙ্গেল ফেজ টেস্ট বাতির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কারণ থ্রি ফেজ ও সিঙ্গেল ফেজ এর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো থ্রি ফেজের লাইন ভোল্টেজ (ফেজ টু ফেজ) ৪০০ ভোল্ট। আর প্রতিটি বাতির ভোল্টেজ ২৫০ ভোল্ট। সেজন্য দু'টি বাতি সিরিজে সংযুক্ত করে থ্রি ফেজের টেস্ট বাতি তৈরি করা হয়, যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। টেস্ট বাতি যে সমস্ত কাজে ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো-
১। কোন লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে কিনা তা জানা যায় ।
২। সাপ্লাই ভোল্টেজ পরিমিত আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা যায়।
৩। কোন যন্ত্রপতিতে বডি বা আর্থ ফন্ট হলে তা পরীক্ষা করে জানা যায়।
৪। আলাদা আর্থিং এর ব্যবস্থা থাকলে টেস্ট বাতি দিয়ে সাপ্লাইয়ের ফেজ ও নিউট্রাল লাইন শনাক্ত করা যায়।
৫। সাপ্লাইয়ের তারের নিরবচ্ছিন্নতা, কয়েলের কার্যকরী অবস্থা, সুইচের পোলারিটি টেস্ট করা যায়।
৬। যে কোন মেশিনের কয়েলের শর্ট সার্কিট, আর্থ ফন্ট এবং ওপেন সার্কিট ত্রুটি পরীক্ষা করা যায়। উল্লেখিত বর্ণনা থেকে আমরা সহজেই বলতে পারি টেস্ট বাতির গুরুত্ব খুব বেশি।
কোন সার্কিটে কারেন্ট চলার পথ ঠিক আছে কিনা দেখতে হলে টেন্ট-বাতির সাহায্যে নেয়া হয়। সেজন্য দুই টার্মিনালের মধ্যে ভোল্টেজ আছে কিনা তা দেখতে হলে ঐ দুই টার্মিনালের সঙ্গে টেস্ট-বাতি ধরলেই বোঝা যায়। যদি বাতি জ্বলে তবে ভোল্টেজ আছে এবং বাতির উজ্জ্বলতার উপর নির্ভর করে সাপ্লাই ভোল্টেজ কিরূপ মানের আছে। এসব ক্ষেত্রে ভোল্টেজের উপর নির্ভর করে সিঙ্গেল ফেজ বা থ্রি ফেজ টেস্ট বাতি ব্যবহার করতে হবে। দু'টি টার্মিনালের মধ্যে কোনটি ফেজ তার আর কোনটি নিউট্রাল তার তা টেস্ট বাতির সাহায্যে জানা যায়; সে ক্ষেত্রে আর্থ টার্মিনাল থাকতে হবে। আর্থ করা নিউট্রাল হলে যদি লাইভ টার্মিনাল কিংবা ফেজ তারের সঙ্গে টেস্ট বাতির একটি তার লাগিয়ে অন্য তারটি আর্থের সঙ্গে কানেকশন করা যায়, তবে বাতি জ্বলবে। তাই এভাবে কানেকশন করলে যখন টেস্ট বাতি জ্বলে, তখন বুঝতে হবে লাইনের লাইভ টার্মিনাল বা ফেজ তার। আর যদি না জ্বলে, তবে সেটি নিউট্রাল তার। বৈদ্যুতিক মেশিনের কয়েল টেস্টের জন্য কয়েলের সাথে সিরিজে বাতি সংযোগ করলে যদি দেখা যায় কোন কয়েলে বাতি কম আলোতে জ্বলছে, তবে সে কয়েল ঠিক আছে। কিন্তু যে কয়েলের ক্ষেত্রে টেস্ট বাতি বেশি উজ্জ্বল হয়ে জ্বলবে, বুঝতে হবে সেই কয়েলেই 'শর্ট' আছে। যদি কোন মেশিনে আর্থ বা গ্রাউন্ড ফল্ট হয়, অর্থাৎ বডিতে বৈদ্যুতিক কানেকশন হয়ে যায়, তবে তাকে মেশিনের আর্থ হওয়া বলে।
এরূপ ত্রুটি নির্ণয় করতে টেস্ট বাতির একটি তার মেশিনের গায়ে লোহার সঙ্গে এবং অন্যটি আর্থে সংযোগ করলে যদি টেস্ট বাতি জ্বলে, তবে বুঝতে হবে মেশিনে গ্রাউন্ড আছে। টেস্ট ল্যাম্পের সঠিক ব্যবহারে খুব সহজে এবং কোন লিখিত পাঠ নেওয়া ছাড়াই টেস্ট করা যায়।
ইনসুলেশন জাতীয় পদার্থ বা পিভিসি তারে যে ইনসুলেশন দেওয়া থাকে উহার রেজিস্ট্যান্সকে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স বলে। ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা বলতে কোন ওয়্যারিং কাজে ব্যবহৃত পরিবাহী এবং অন্যান্য সামগ্রীর ইনসুলেশনের সঠিকতা বোঝায়। কোন ওয়্যারিং কাজের ইনসুলেশন এমন হওয়া উচিত যাতে দু'টি পরিবাহী কিংবা পরিবাহী ও কোন সরঞ্জামের ধাতব বড়ি বা আর্থের মধ্যে কোন লিকেজ কারেন্ট প্রবাহিত না হয়। কোন ওয়্যারিং কাজ শেষে দুই ধরনের পরীক্ষা করা হয়।
ক) ফেজ ও নিউট্রাল বা দুই পরিবাহী তারের মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স এবং
খ) পরিবাহী তার এবং আর্থ তারের মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স ।
মেগারের সাহায্যে ফেজ ও নিউট্রালের মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্টের প্রক্রিয়া হলো-
১। মেইনসুইচ খোলা থাকবে তবে অন্যান্য ফিউজ সঠিকভাবে লাগান থাকবে।
২। ব্যবহৃত ডিভাইস বা লোডসমূহ খোলা থাকবে অর্থাৎ হোল্ডার হতে সকল বাতিগুলো খুলে ফেলতে হবে এবং যে সমস্ত হোল্ডারে শর্ট সংযোগ আছে তাদের খুলে ফেলতে হবে। পাখা থাকলে তার সংযোগও খুলে ফেলতে হবে।
৩। সকল সুইচসমূহ 'অন' থাকবে।
৪। মেইনসুইচ এর দু'টি টার্মিনাল মেগার এর L এবং E প্রান্তের সাথে লাগাতে হবে।
৫। মেগার এর হাতল ঘুরালে ডায়ালের উপর কাঁটাটি যে মান নির্দেশ করবে সে মানই হবে দু'টি পরিবাহীর মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স। এ ক্ষেত্রে মেগারের পাঠ যদি ইনফিনিটি (a) বা নূন্যতম 1MS2 দেখায় তাহলে বুঝতে হবে ইনসুলেশন রেজিষ্ট্যান্স সঠিক আছে। আর যদি 1M2 এর কম দেখায় তাহলে বুঝতে হবে ওয়্যারিংয়ে লিকেজ আছে। আবার যদি মেগারের পাঠ শূন্য দেখায় তাহলে ওয়্যারিং এ শর্ট সার্কিট রয়েছে। এভাবে ফেজ তার ও নিউট্রাল কিংবা দু'টি পরিবাহী তারের মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট করা হয়।
কন্ডাক্টর ও আর্থের মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট মধ্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্ট করতে যেভাবে কাজ করতে হবে তা হলো-
১। মেইনসুইচ অফ করে তার ফিউজ খুলে নিতে হবে।
২। বাকী সমৃদ্ধ সুইচ অন থাকবে।
৩। কনজিউমিং ডিভাইসসমূহ লাগান থাকবে।
৪। মেইনসুইচের লোড প্রান্তের টার্মিনাল দু'টি শর্ট করতে হবে।
৫। শর্ট প্রাচ্চে মেগার L পয়েন্ট এবং E আর্থ এর সাথে সংযোগ করতে হবে।
৬। মেগার এর হাতল ঘুরালে পয়েন্টার যা নির্দেশ করবে ভাই আর্থ টু কন্ডাক্টর এর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স। মিটার রিডিং সর্বনিম্ন ২০ M Ohm হলে বুঝতে হবে ইনসুলেশন রেজিট্যাল সঠিক আছে। যদি শূন্য (0) নির্দেশ করে তবে বুঝতে হবে কন্ডাক্টর ও আর্দ্র এর মধ্যে শর্ট সার্কিট হয়েছে।
ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্সের গ্রহণযোগ্যতা হলো-
সকল কন্ডাক্টর একত্রে জড়ানো অবস্থায় পালাক্রমে প্রতিটি কন্ডাক্টরের মধ্যে পরিমাপ করা হলে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স ১ মেগাপ্রজম এর কম হবে না। বৈদ্যুতিক মেশিন বা সরঞ্জামের কাঠামো এবং প্রতিটি বৈদ্যুতিক অংশের মধ্যকার ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স উক্ত সরঞ্জামে উল্লিখিত মান অনুযায়ী হবে। মান উল্লেখ না থাকলে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স ০.৫ মেগাওহমের বেশি হতে হবে। তারের দৈর্ঘ্য যত বেশি হবে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স তত বেশি হবে।
প্রচলিত রেগুলেশন অনুযায়ী সর্বনিম্ন ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্সের মান নিম্নে বর্ণিত দু'টি পদ্ধতিতে হিসেব করা যায় ক) পয়েন্ট পদ্ধতি ও খ) লিকেজ কারেন্ট ও সিস্টেম ভোল্টেজ ভিত্তিক পদ্ধতি। পয়েন্ট পদ্ধতি: এ পদ্ধতি অনুসারে ওয়্যারিং এ মোট কতটি পয়েন্ট বা আউটলেট রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স বের করা হয়। যেমন- কোন ওয়্যারিং এ মোট ১০টি পয়েন্ট বা আউটলেট থাকলে এ ওয়্যারিং এর জন্য গ্রহণযোগ্য সর্বনিম্ন ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স হবে ২.৫ MΩ ।
লিকেজ কারেন্ট ও সিস্টেম ভোল্টেজ ভিত্তিক পদ্ধতি : লিকেজ কারেন্ট এবং সিস্টেম ভোল্টেজ ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে কোন বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার বা ওয়্যারিং এর ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স নির্ণয়ে সর্বোচ্চ লিকেজ কারেন্ট হবে ৫০০০ ভাগের ১ ভাগ। যেমন- কোন ওয়্যারিং এর সরবরাহ ভোল্টেজ ২৩০ ভোল্ট এবং সর্বোচ্চ কারেন্ট ১০ অ্যাম্পিয়ার হয়, তবে উক্ত ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ লিকেজ কারেন্ট = ১০×১৫০০০=০.০০২ অ্যাম্পিয়ার।
সুতরাং, সর্বনিম্ন ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স হবে, Ri= সরবরাহ ভোল্টেজ/লিকেজ কারেন্ট = ২৩০০.০০২ = ১.১৫ মেগাওহম।
আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলতে সম্পূর্ণ আর্থিং পদ্ধতির রেজিস্ট্যান্সকেই বোঝায়। বাড়ি, ওয়ার্কশপ, কলকারখানার মেইনআর্থ টার্মিনাল থেকে আর্থ ইলেকট্রোডের মাধ্যমে যে রেজিস্ট্যান্স পাওয়া যায়, তাকে আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলে। মোট কথা আর্থ লিড এবং আর্থের নিরবিচ্ছিন্ন তারের রেজিস্ট্যান্সকেই আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলে। আর্থিং এর রেজিস্ট্যান্স খুব কম হওয়া বাঞ্ছনীয়। সামান্য কারেন্টও যদি কোন সরঞ্জামাদির বড়িতে আসে তা যেন সাথে সাথে আর্থিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই মাটির নিচে যেতে পারে সে জন্যই আর্থ রেজিস্ট্যান্স কম হওয়া দরকার। বাসা বাড়ির ক্ষেত্রে আর্থ রেজিস্ট্যান্স সর্বনিম্ন ১১৫ এবং পাহাড়ি এলাকায় সর্বোচ্চ ৫১২ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। আর বড় বড় মিল ফ্যাক্টরিতে আর্থ রেজিস্ট্যান্স ১২ এর কম হওয়া উচিৎ।
আর্থিং সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা তা নিম্নলিখিত যে কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়-
১। মেগার বা আর্থ টেস্টার পদ্ধতি ও
২। টেস্ট ল্যাম্প পদ্ধতি।
এখানে মেগার বা আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপের পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো: মেগার বা আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ ইলেকট্রোডের রেজিস্ট্যান্স মাপা হয়। এতে তিনটি টার্মিনাল থাকে।
(ক) আর্থ টার্মিনাল, (খ) পটেনশিয়াল টার্মিনাল এবং (গ) কারেন্ট টার্মিনাল।
যে আর্থ ইলেকট্রোড এর রেজিস্ট্যান্স মাপতে হবে তার সঙ্গে E টার্মিনাল কানেকশন করতে হবে। এবার স্পাইক নিয়ে একই লাইনে ঐ আর্থ ইলেকট্রোড হতে ৫ থেকে ১০ মিটার পর পর দূরে মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। প্রথমটির অর্থাৎ আর্থ ইলেকট্রোড এর নিকটবর্তী স্পাইককে P টার্মিনালের সাথে এবং পরবর্তী দ্বিতীয়টির সাথে C টার্মিনাল সংযোগ করতে হবে। এবার মেগারের হাতলের সাহায্যে জেনারেটরকে ঘুরালে E হতে মাটির মধ্য দিয়ে C তে পরবর্তী কারেন্ট প্রবাহিত হবে। এ কারেন্টকে I ধরলে এবং E হতে P পর্যন্ত ভোল্টেজকে V ধরলে E হতে P পর্যন্ত আর্থের রেজিস্ট্যান্স হবে, R=VIΩ, R এর মান অবশ্য আর্থ টেস্টারে সরাসরি রিডিং পাওয়া যাবে। যাহা চিত্রে দেখানো হলো।
এভাবে মাঝের স্পাইককে একই লাইনে ১.৫ মিটার হতে ৩ মিটার যথাক্রমে আর্থ ইলেকট্রোডের নিকট ও দূরে সরিয়ে পোঁতে আরও একবার রিডিং নিতে হবে। তারপর মোট তিনটি রিডিং এর গড় মানকে আর্থের রেজিস্ট্যান্স ধরা হবে। কিন্তু জনবহুল শহরে যেখানে P এবং C স্পাইক পৌতার জায়গা নেই। সেখানে আর্থ টেস্টারের P ও C টার্মিনাল দুইটিকে শর্ট করে তার সংগে একটি লিডিং তার সংযোগ করে পানির পাইপের সংঙ্গে সংযোগ করতে হবে। এবার হাতল ঘুরিয়ে টেস্টারের রিডিং নিতে হবে। প্রথম রিডিং হতে দ্বিতীয় রিডিং বাদ দিলে আর্থ রেজিস্ট্যান্স এর মান পাওয়া যায়। টেস্ট করার সময় সতর্ক হতে হয় যেন আর্থ ইলেকট্রোড ও স্পাইক কাছাকাছি না থাকে।
আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপের সাবধানতাগুলো হলো-
১। আর্থ টেস্টারের পাঠ সাবধানতার সাথে প্রবণ করতে হবে।
২। সাহায্যকারী স্পাইক মাটির মধ্যে ১ মিটার পর্যন্ত পৌঁততে হবে।
৩। টার্মিনাল সংযোগ শক্তভাবে আটকাতে হবে যাতে খুলে না যায়।
৪। রেজিস্ট্যান্স আছে কিনা তা জানার জন্য আর্জিং রেজিস্ট্যান ১ বৎসর পর পর পরীক্ষা করা উচিত।
তাছাড়া আর্থ টেস্টিং বন্ড দিয়ে খুব সহজেই আর্থ রেজিস্ট্যান্স এর অবস্থা জানা যায় সেক্ষেত্রে টেস্ট বাতির এক প্রাপ্ত সাপ্লাইয়ের সাথে এবং অন্য প্রাপ্ত ঐ আর্থিং এর সাথে সংযোগ করলে বাতি যদি ভালোভাবে জ্বলে তবে বুঝতে হবে আর্থিং ভালো, না হলে আর্থিং ভালো হয় নাই। যদি বাড়ির আর্থ কানেকশন থেকে কিছু দূরে (অর্থাৎ যত দূরে পরস্পরের রেজিস্ট্যান্স ক্ষেত্র জড়াজড়ি হয় না) নলকুপের পানির লাইন আর্থ টেস্টার ছাড়াই আর্থ টেস্টিং বাজি দিয়ে খুব সহজেই আর্থিং এর কার্যকারিতা জানা যায়। পাইপ প্রভৃতি এমন আর্থ করা জিনিস পাওয়া যায় যার রেজিস্ট্যাল এত কম যে বিবেচনার মধ্যে আসে না। তবে একটি ভোল্টমিটার আর একটি অ্যামিটার দিয়ে আর্থ কানেকশনের রেজিস্ট্যান্স বের করা যেতে পারে। চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে, নলকূপের পানির লাইন আর আর্থ কানেকশনের সঙ্গে একটি অ্যামিটার লাগিয়ে তা দিয়ে অল্টারনেটিং কারেন্ট দিতে হবে, আর ঐ দুইয়ের মধ্যের ভোল্টেজ পরিমাপ করতে হবে।
এখন যদি জলের পাইপের রেজিস্ট্যান্স ধর্তব্যের মধ্যে না হয়, তবে মাটির রেজিস্ট্যান্স = ভোল্টেজ/কারেন্ট
• সরবরাহ না থাকলে নিয়ন টেস্টার বা টেস্ট ল্যাম্পের মাধ্যমে পোলারিটি টেস্ট করা যাবে না।
• সরবরাহ থাকলে আর্থ টেস্টার বা মেগারের মাধ্যমে পোলারিটি টেস্ট করা যাবে না।
• কনটিনিউয়িটি টেস্টের সময় সকল লোড লাগাতে হবে বা টার্মিনালসমূহ শর্ট করতে হবে।
•আর্থ ইলেকট্রোড ও স্পাইক কাছাকাছি পুঁতা যাবে না।
• বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
• ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্টের সময় রিডিং ১০ সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ১ মিনিট সময়ের মধ্যে গ্রহন করতে হবে।
• আর্থ ইলেকট্রোডের সাথে আর্থ টেস্টারের E টার্মিনাল, আর্থ ইলেকট্রোড এর নিকটবর্তী স্পাইককে P টার্মিনাল এবং অন্যটি C টার্মিনালে সংযোগ করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আরও দেখুন...